সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অপহৃত হয়েছে আফগানিস্তানের (Afghanistan) ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী মোল্লা বরাদর। শুধু তাই নয়, মারা গিয়েছে তালিবান সরকারের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু হাইবাতোল্লা আখুন্দজাদা। সোমবার একটি রিপোর্টে এমনই দাবি জানাল ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দ্য স্পেকটেটর’। সম্প্রতি সরকার গঠনের সময় বরাদর গোষ্ঠী এবং হাক্কানি নেটওয়ার্কের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষের কারণেই অপহরণ করা হয়েছে মোল্লা বরাদরকে। আর এই খবর সামনে আসতেই আন্তর্জাতিক স্তরে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি এতে তালিবানের অন্দরের ক্ষমতার লড়াইয়ের ছবিটা আরও স্পষ্ট হয়ে গেল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
কারা মন্ত্রিত্ব পাবে, কবে শপথগ্রহণ হবে, তা চূড়ান্ত করতে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই কাবুলে (Kabul) প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে বৈঠকে বসেছিল তালিবান জঙ্গিগোষ্ঠীর নেতারা। নাম চূড়ান্ত হওয়া তো দূরে থাক, বৈঠকে রীতিমতো গুলিবৃষ্টি হয়। হাতাহাতি বেঁধে যায় নেতাদের মধ্যে। এমনকী, মোল্লা বরাদরের মতো নেতাকেও হেনস্থা করে হাক্কানি নেটওয়ার্কের (Haqqani Network) শীর্ষনেতারা। সেই রিপোর্টও প্রকাশ্যে এসেছিল।
তালিবান আফগানিস্তানে (Afghanistan) ক্ষমতা দখলের পর থেকেই সরকারের সম্ভাব্য প্রধান হিসাবে নাম উঠে এসেছিল মোল্লা আবদুল গনি বরাদরের (Taliban leader Mullah Baradar)। তিনিই এই জঙ্গি সংগঠনের পরিচিত মুখ। নরমপন্থী এই নেতাই আমেরিকার সঙ্গে শান্তিচুক্তি চালিয়েছিল। কিন্তু এরপরই তালিবানের অন্য অংশ, বিশেষত হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে তার দ্বন্দ্বের কথা সামনে আসছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বরাদরের নাম নয়া আফগান সরকারের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
জানা যায় মন্ত্রিসভা গঠন নিয়ে আলোচনার সময় বরাদরকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্কের এক নেতা। ওই সংগঠনের প্রধান তথা তালিবান সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিনের কাকা খলিল হাক্কানিই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। সূত্রের খবর, তালিবান গোষ্ঠীর বাইরে অন্য নেতা, বিভিন্ন উপজাতি নেতৃত্ব, প্রাক্তন প্রেসিডেন্টদের মন্ত্রিসভায় শামিল করতে চাইছিল বরাদর। যাতে তা গোটা বিশ্বের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়। আর তা নিয়েই শুরু হয় বিতণ্ডা। কাবুলের প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে বৈঠকের মাঝপথেই চেয়ার ছেড়ে উঠে বরাদরকে ঘুসি মারতে শুরু করে খলিল উর রহমান হাক্কানি। আসরে নামে উভয় নেতার দেহরক্ষীরা। পরস্পরকে লক্ষ্য করে গুলি চালালে কয়েকজন নিহত হয়। তবে ঘটনায় বরাদরের মৃত্যুর খবর রটলেও সে বেঁচে আছে বলে দাবি করা হয়। এর মধ্যেই এবার বরাদরের অপহরণের খবর সামনে এল। শুধু তাই নয়, তালিবানের সর্বোচ্চ নেতা আখুন্দজাদার মৃত্যুর রিপোর্টও প্রকাশিত হয়েছে। যদিও তালিবানের তরফে সরকারিভাবে এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এদিকে, তালিবানের পক্ষ থেকে এদিনই আবার মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যদের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু তাতে একজন মহিলাও স্থান পাননি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.