সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ানমারে (Myanmar) ফের ক্ষমতা দখলের পথে জনপ্রিয় নেত্রী আং সান সু কি। মাত্র বছর পাঁচেক আগে যে গণতন্ত্রের ভিত স্থাপন করা হয়েছিল তা আজ নড়বড়ে হলেও আগামী রবিবার ‘নিয়মরক্ষা’য় ভোট দেবে বার্মিজ জনতা।
২০১৫ সালে প্রায় পাঁচ দশকের সামরিক শাসনের শিকল ভেঙে মায়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্টা করেন সু কি। সেবছরের নির্বাচনে ‘জুন্টা’র বিরুদ্ধে জনরোষ ভোটবাক্সে সু কি’র হয়ে কার্যত সুনামি তৈরি করে। বিপুল জনমতে মসনদে বসেন তিনি। কিন্তু, তারপর পরিস্থিতি পালটেছে। রোহিঙ্গা গণহত্যা থেকে শুরু করে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ উঠেছে শাসকদল ‘ন্যাশনাল লিগ অফ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি’র বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক মঞ্চেও নোবেলজয়ী সু কি’র ছবি ধাক্কা খেয়েছে। যে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল জনতা, আজ ‘গণতান্ত্রিক পর্দা’র আড়ালে বসে ছড়ি ঘোড়াচ্ছে সেই সেনাবাহিনীই। এহেন পরিস্থিতিতে রবিবার ভোট দেবে মানুষ। মায়ানমারে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লক্ষ নথিভুক্ত ভোটার রয়েছে। তবে করোনা মহামারীর জেরে এবছর ভোট কম পড়বে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সমালোচকদের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চাইতে ক্ষমতা ধরে রাখা মায়ানমারের শাসকদলের কাছে প্রধান হয়ে উঠেছে। যে ‘শুদ্ধিকরণ’ ও নীতিগত পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন ৭৫ বছরের নেত্রী সু কি, তা আদৌ সম্ভব নয়। কারণ, ২০০৮ সালে সামরিক নজরদারিতে যে সংবিধান তৈরি হয়েছে, সেখানে পার্লামেন্টে কোনও বড় আইন রুখে দেওয়ার মতো আসন সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলিও সেনার হাত রয়েছে। ফলে গণতন্ত্র প্রতিষ্টা হলেও, গণতান্ত্রিক শাসন এখনও প্রতিষ্টা হয়নি সেদেশে। এদিকে, রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রভাব নির্বাচনে খুব একটা পড়বে না বলেই মনে করছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা। কারণ, রোহিঙ্গাদের সেই অর্থে ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। এবং বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশটির সংখ্যাগুরু মানুষের মধ্যে রোহিঙ্গাদের নিয়ে খুব একটা যে সহানুভূতি আছে তেমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই। ফলে সেনা ও জনতার সমর্থনে মসনদে ফের সু কি’র বসা একপ্রকার নিশ্চিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.