সুকুমার সরকার, ঢাকা: রোহিঙ্গাদের এলাকাছাড়া করতে ধর্ষণকে ‘হাতিয়ার’ করছে মায়ানমার সেনা, অভিযোগ এমনটাই। চলছে নির্বিচারে হত্যালীলা। হাজার-হাজার নারী শিকার হয়েছে সেনার যৌন নিগ্রহের। এমনটাই অভিযোগ জানিয়েছেন এক শরণার্থী।
মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সরকারি বাহিনী ও রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের মধ্যে চলা সংঘর্ষের মাশুল দিতে হচ্ছে নিরীহ মানুষকে। প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদশের একটি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন হাজেরা বেগম (নাম পরিবর্তিত)। তাঁদের উপর চলা অমানবিক অত্যাচারের কথা তিনি তুলে ধরেন সংবাদমাধ্যমের সামনে। তিনি জানান, একদিন রাতে তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করে সরকারি বাহিনী। যাঁরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন, তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান। বাকিদের নির্বিচারে হত্যা করা হয়। ধর্ষণ করা হয় মহিলাদের।
বাংলাদেশে ২৫ আগস্টের পর যত রোহিঙ্গা শরণার্থী প্রবেশ করেছেন, তাঁদের একটা বড় অংশই নারী ও শিশু। ইলিয়াস নামের আর এক শরণার্থী জানান, তাঁরা যখন পালিয়ে আসেন তখন চোখের সামনে একজন মহিলাকে ধর্ষিত হতে দেখেন তিনি। নির্যাতিতার কোলে তাঁর শিশু সন্তান ছিল। কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় যেসব নারী ও শিশু আশ্রয় নিয়েছে তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসার ভার নিয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রশাসন। তাঁরা জানিয়েছেন, ধর্ষণ বা যৌন নির্যাতন নিয়ে মুখ খুলছেন না নির্যাতিতারা। তাই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার কাজ আরও কঠিন হয়ে উঠছে।
জানা গিয়েছে, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত রাখাইন প্রদেশের প্রায় ১৭৬টি গ্রাম এখন জনমানবশূন্য। মায়ানমার সেনার সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের জেরে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গিয়েছেন বাসিন্দারা। রাখাইনের তিনটি শহরতলি এলাকায় সর্বমোট ৪৭১টি গ্রাম রয়েছে। রাষ্ট্রসংঘের পরিসংখ্যান মতে মায়ানমার থেকে গত কয়েক সপ্তাহে তিন লক্ষ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.