সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চারজন মানবাধিকার কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছিল মায়ানমারের (Myanmar) সামরিক জুন্টা সরকার। এই ঘোষণা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছে জুন্টা। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে মদত দিয়েছেন, এই অভিযোগেই চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। জানা গিয়েছে, গত দশ বছরে প্রথম বার মায়ানমারে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ কার্যকর করা হল। মায়ানমারের সামরিক সরকারের (Junta Government) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে রাষ্ট্রসংঘ-সহ বেশ কয়েকটি দেশ।
জানা গিয়েছে, এপ্রিল মাসেই ওই চার ব্যক্তির বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন অসংখ্য সাধারণ মানুষ। সেই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন ওই চার জন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রাক্তন নেত্রী সু কির ঘনিষ্ঠ হিপহপ শিল্পী জেয়া থাও। প্রসঙ্গত, নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় ফিরে এলেও ফের সু কিকে কারচুপির অভিযোগে আটক করে সেদেশের সেনা বাহিনী। তারপরেই দেশের শাসনভার চলে যায় সেনার হাতে। সামরিক শাসনের প্রতিবাদেই পথে নেমেছিলেন মায়ানমারের আমজনতা।
জানা গিয়েছে, ওই চার জন মানবাধিকার কর্মীর বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছিল। কবে কীভাবে তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে, সেই বিষয়েও বিশদে কিছু জানানো হয়নি জুন্টার তরফে। সাধারণত ফাঁসির মাধ্যমেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় মায়ানমারে। তাঁদের হত্যার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে সেদেশের ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট। বিশ্বের মানুষ মায়ানমারের নৃশংসতাকে সাজা দিক, এমন আরজি করা হয়েছে তাদের তরফে।
সেনা শাসন শুরু হওয়ার পর থেকেই মায়ানমারে অস্থিরতা শুরু হয়েছে। চারজনের খুনের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সেই সঙ্গে আটক নেত্রী সু কিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান মিশেল ব্যাচেলেট এই ঘটনাকে ‘নিষ্ঠুর’ বলে অভিহিত করেছেন। যৌথ ভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিবৃতি দিয়েছে ব্রিটেন, আমেরিকা-সহ বেশ কয়েকটি দেশ। সেখানে বলা হয়েছে, “মানবাধিকার রক্ষায় অত্যন্ত উদাসীন এই সরকার। চারজনকে হত্যা করার ঘটনাই তার জ্বলন্ত প্রমাণ।” ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমেছে সাধারণ মানুষও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.