ভূমিকম্পের জেরে গুঁড়িয়ে গিয়েছে বহুতল।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৭.৭ মাত্রার মারণ ভূমিকম্পে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে মায়ানমার। ভূমিকম্পের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী থাইল্যান্ডেও। ভেঙে পড়েছে একের পর এক বহুতল, ব্রিজ। শেষ পাওয়া খবরে জানা গিয়েছে, মৃতের সংখ্যা প্রায় ১৫০। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। শিরদাঁড়ায় কাঁপন ধরিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনার একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। যদিও এই ঘটনাকে একেবারেই অস্বাভাবিক হিসেবে দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। কম্পনের কেন্দ্রস্থল মায়ানমারের সাগাইং অঞ্চলকে ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবেই পরিচিত। অদূর ভবিষ্যতে এখানে আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
ভূ-বিজ্ঞানীদের দাবি অনুযায়ী, ভারতীয় প্লেট ও বার্মা মাইক্রোপ্লেটের মধ্যবর্তী অঞ্চলের মধ্যে পড়ে এই সাগাইং ফল্ট। এই দুই প্লেটের মধ্যবর্তী ফাটল ভূপৃষ্টে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার বিস্তৃত। যার জেরেই বারবার কেঁপে ওঠে এখানকার মাটি। ভূতাত্ত্বিক জটিলতায় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের জেরে সৃষ্ট হয় ভূমিকম্প। শুক্রবারের এই ভূমিকম্প প্রসঙ্গে ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) এর পরিচালক ডঃ ওপি মিশ্র বলেন, সাগাইং ফল্ট মায়ানমারের দীর্ঘতম ফল্ট। অতীতেও একইমাত্রার ভূমিকম্প বহুবার হয়েছে এই অঞ্চলে।
ডঃ মিশ্র আরও বলেন, শুক্রবার প্রথম ভূমিকম্পটির পর একাধিক আফটারশক হয়েছে। ঠিক কতমাত্রার কতগুলি আফটারশক হয়েছে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই জানতে পারব আমরা। মায়ানমারের ভূমিকম্পের জেরে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে মিশ্র বলেন, “দুই প্লেটের মধ্যবর্তী সাগাইং ফল্টের ফাটল অগ্রসর হয়েছে মায়ানমার থেকে ব্যাংককের দিকে। ব্যাংককে রয়েছে পলি বেল্ট। তুলনামূলক এখানকার মাটি দুর্বল হওয়ার কারণে বড় মাত্রার ভূমিকম্প সহ্য করতে পারেনি এখানকার ভবনগুলি। সাগাইং ফল্টের কারণে এখানে এর আগেই যে বড়মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে সেকথা স্মরণ করিয়ে ডঃ মিশ্র বলেন, ১৯৪৬ সালে এই অঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। ২০১২ সালেও ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ফলে এই অঞ্চল যে অত্যন্ত স্পর্শকাতর তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
বিজ্ঞানীদের দাবি অনুযায়ী, প্রতি বছর ১১ মিলিমিটার থেকে ১৮ মিলিমিটার পর্যন্ত স্থানান্তরিত হয় এই প্লেট দুটি। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মাটির গভীরে প্রবল চাপ তৈরি হয়। যার প্রভাবে কেঁপে ওঠে সাগাইং ফল্টের অঞ্চল। অদূর ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে আরও বড় ভূমিকম্প হওয়ার সম্ভাবনাও এড়িয়ে যাচ্ছেন না বিজ্ঞানীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.