সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ানমারে (Myanmar) সামরিক বুটের আঘাতে রক্তাক্ত গণতন্ত্র। তারপর থেকেই ‘খোলা হাওয়া’র দাবিতে চলছে আন্দোলন। সেনাশাসকদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাচ্ছে জনতা। আর সেই বিক্ষোভ দমাতে নৃশংসতার নজির গড়েছে দেশটির ফৌজ। এহেন সময়ে রাষ্ট্রসংঘের এক রিপোর্টে জানা গিয়েছে যে এপর্যন্ত প্রায় দেড় হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি মায়ানমার নিয়ে এক রিপোর্ট পেশ করেছে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। সেখানে বলা হয়েছে, গত একবছরে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চলা আন্দোলনে প্রাণ হারিয়েছেম অন্তত দেড় হাজার গণতন্ত্রকামী। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে আটক করা হয় ১১ হাজার ৭৮৭ জনকে। তাদের মধ্যে অন্তত নয় হাজার এখনও বন্দি। জেনেভায় এক বৈঠকে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র রবিনা শামদাসানি স্পষ্ট বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি যে মায়ানমারে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৫০০ জন প্রতিবাদী। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ প্রদর্শনের জন্যই তাদের মরতে হয়।” তিনি আরও বলেন, “এই পরিসংখ্যান শুধুমাত্র বিক্ষোভ মিছিলে হওয়া মৃত্যুর। মায়ানমারে সশস্ত্র সংঘর্ষে মদের মনে হয় আরও কয়েক হাজার ,অনুষের মৃত্যু হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়। নেত্রী আং সান সু কি’র নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে টাটমাদাও বা বার্মিজ সেনা। তারপর থেকেই ফৌজের বিরুদ্ধে চলছে প্রতিবাদ। সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে বিদ্রোহীরা। কয়েকদিন আগেই জুন্টার বিরুদ্ধে গণহত্যার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে আসে এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে।
গত ডিসেম্বর মাসে এক প্রতিবেদনে বিবিসি দাবি করে, গতবছরের জুলাই মাসে মধ্য মায়ানমারের সাগাইং প্রদেশের কানি শহর সংলগ্ন অন্তত চারটি গ্রামে গণহত্যা চালিয়েছিল বার্মিজ সেনা। যার ফলে শুধুমাত্র ওই চার এলাকাতেই মৃত্যু হয়েছিল ৪০ জন সাধারণ মানুষের। বলে রাখা ভাল, কানি শহর বিদ্রোহীদের ঘাঁটি। ওই অঞ্চলে সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করা মিলিশিয়াগুলিকে শাস্তি দিতেই গণহত্যা চালায় ‘টাটমাদাও’ তথা বার্মিজ সেনা। বিবিসি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াইন নামের একটি গ্রামে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি মানুষকে মারা হয়। সেখানে ১৪ জন গ্রামবাসীর উপর অকথ্য নির্যাতন চালিয়ে তাঁদের হত্যা করেছে ফৌজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.