সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের জায়গা দখল করে সেনাঘাঁটি গড়ছে মায়ানমার। সদ্য প্রকাশ্যে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, রোহিঙ্গা গ্রামগুলিতে যাতে উদ্বাস্তুরা ফিরে আসতে না পারে তার জন্য এই পন্থা নিয়েছে বার্মিজ সেনা। এভাবেই রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের অস্তিত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
[রোহিঙ্গা শিবিরে প্রবেশের চেষ্টা, কক্সবাজারে ৩৯ জন বিদেশি স্বেচ্ছাসেবক আটক]
সদ্য কয়েকটি স্যাটেলাইট ইমেজ প্রকাশ্যে আনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। ওই ছবিগুলিতে দেখা গিয়েছে, জনশূন্য রোহিঙ্গা গ্রামগুলিতে ঘাঁটি বানাচ্ছে বার্মিজ সেনা। রাখাইনের বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে চেকপোস্ট থেকে শুরু করে আর্মি ব্যারাক গড়ে তোলা হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই দেশে ফিরলেও নিজেদের ভিটে ফেরত পাবেন না ওই এলাকার বাসিন্দারা। সু কি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন অ্যামনেস্টির শীর্ষ আধিকারিক টিরানা হাসান। তাঁর অভিযোগ, “অত্যন্ত গোপনীয়ভাবে রাখাইন প্রদেশকে নতুন রূপ দেওয়া হচ্ছে। অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের গণহত্যার পরিকল্পনা করছে বার্মিজ সেনা। পরিকাঠামোর নামে এই চক্রান্তকে কোনঅভাবেই সফল হতে দেওয়া যাবে না।”
‘দ্য টেলিগ্রাফ’ সূত্রে খবর, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত রাখাইনে তিনটি সেনাঘাঁটি বানিয়েছে মায়ানমার। একই সঙ্গে আরও ছাউনি বানানোর কাজ চলছে। এছাড়াও শরণার্থীদের ফিতে নেওয়ার জন্য তৈরি কেন্দ্রগুলির আশেপাশে মোতায়েন রয়েছে বার্মিজ সেনা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে ফিরলেও কার্যত বন্দী হয়েই নির্দিষ্ট কেন্দ্রগুলিতে থাকতে হতে পারে রোহিঙ্গাদের। তাঁদের চলাফেরায় ধার্য হতে পারে একাধিক নিষেধাজ্ঞা।
[মায়ানমারকে ৮,০৩২ রোহিঙ্গার তালিকা দিল ঢাকা]
উলেখ্য, ২০১৮-র জানুয়ারিতে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে চুক্তি স্বাক্ষর করে মায়ানমার ও বাংলাদেশ। দু’বছরের মধ্যে রাখাইনের বৈধ রোহিঙ্গা বাসিন্দাদের ফেরত নিতে রাজি হয় নাইপিদাও। তবে এখনও পর্যন্ত এই মর্মে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ করেনি মায়ানমার। কয়েকদিন আগেই এই সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক মঞ্চের হস্তক্ষেপের আবেদন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উল্লেখ্য, ২০১৭-র অগাস্ট মাসে রাখাইনে বার্মিজ সেনার ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালায় রোহিঙ্গা জঙ্গিরা, তারপরই প্রবল অভিযান শুরু করে সরকারি বাহিনী। ফলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.