সুকুমার সরকার: আন্তর্জাতিক মহলের চাপের মুখে অবশেষে রোহিঙ্গা নিপীড়নের কথা স্বীকার করে তদন্তের ঘোষণা করল মায়ানমার (Myanmar)। শুধু তাই নয়, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর ‘বড় পরিসরে’ নিপীড়ন চালানো হয়ে থাকতে পারে বলে স্বীকার করেছে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। সম্প্রতি মায়ানমারের পক্ষ ত্যাগ করা দু’জন সেনার রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিষয়ে বিবৃতি দেওয়া এবং নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে পৌঁছনোর পর বৈশ্বিক চাপ ও সমালোচনার মুখে মায়ানমারের সেনাবাহিনী গত মঙ্গলবার একটি বিবৃতিতে এই স্বীকারোক্তি করেছে। একই সঙ্গে তারা এই নিপীড়নের ঘটনাগুলোর তদন্তের কথা ঘোষণা করেছে। এজন্য তদন্তকারী দলের কার্যপরিধিও বাড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মায়ানমারের সেনাবাহিনী ২০১৭ সালে এবং তার আগে রাখাইনে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানে সম্ভাব্য বড় পরিসরে নিপীড়ন চালানোর বিষয়টি তদন্ত করছে। রাষ্ট্রসংঘ এরই মধ্যে বলেছে, ওই অভিযানে রোহিঙ্গা (Rohingya) মুসলমানদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ওই অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সাত লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা তাদের জনগোষ্ঠীর ওপর হত্যা, ধর্ষণ, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ-সহ ব্যাপকমাত্রায় নিপীড়নের অভিযোগ করেছে। যদিও বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ১১ লক্ষের বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। মায়ানমার আবার সেনা গণহত্যার অভিযোগ নাকচ করে বলে আসছে যে তাদের অভিযান বৈধ ছিল। এবিষয়ে কিছু সেনার বিচার করলেও তাদের তথ্য প্রকাশ করেনি।
এদিকে ‘রোহিঙ্গা সংকটে প্রয়োজন রাজনৈতিক সমাধান, যা রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে প্রত্যাবাসনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে। আর এ প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে সমস্যার মূল কারণগুলোকে চিহ্নিত করে তা নিষ্পত্তি, যথোপযুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনার মতো বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে হবে।’ রোহিঙ্গা সমস্যার সাম্প্রতিক চারবছর: টেকসই সমাধান নিশ্চিতের চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সাইড ইভেন্ট বক্তব্যে একথা বলেন রাষ্ট্রসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার ৭৫তম অধিবেশন উপলক্ষে বাংলাদেশ, কানাডা, সৌদি আরব ও তুরস্ক এই ইভেন্টটির আয়োজন করে। ভার্চুয়াল ইভেন্টটিতে রাষ্ট্রসংঘের সদস্য দেশ, রাষ্ট্রসংঘ সদর দপ্তর ও এর সংস্থা, সিভিল সোসাইটি ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.