সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মিউনিখে অবস্থিত ইজরায়েলি দূতাবাসের সামনে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করার অভিযোগ। যুবককে দেখা মাত্রই গুলি করে জার্মান পুলিশ। এই ঘটনায় আহত হয়েছে ওই সন্দেহভাজন। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর। ঘটনার তদন্ত জারি রেখেছে জার্মান পুলিশ। তবে কেন আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সেখানে ওই যুবক গিয়েছিল তা এখনও জানা যায়নি।
বৃহস্পতিবার, মিউকিখ পুলিশ বিবৃতি দিয়ে জানায়, আজ সকাল ১০টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ক্যারোলিনেনপ্ল্যাটজ শহরে। ওই স্থানেই একটি মিউজিয়াম ও গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। যেখানে ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত নাৎসি শাসনের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করা হয়। তবে এই ঘটনায় অন্য কোনও হতাহতের খবর নেই এখনও পর্যন্ত। পুলিশ জানিয়েছে, ওই স্থান থেকে অন্য কোনও সন্দেহভাজনের হদিশ মেলেনি। তবে এই ঘটনার পর গোটা শহর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত স্থানীয়দের ঘটনাস্থল এড়িয়ে চলার কথা বলা হয়েছে। পুলিশের তল্লাশি অভিযানের জন্য একটি হেলিকপ্টারও মোতায়েন করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, এই ঘটনা নিয়ে ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে যে আপাতত মিউনিখের ইজরায়েলি দূতাবাসটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ১৯৭২ সালের এই ৫ সেপ্টেম্বরই মিউনিখ অলিম্পিকে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হয়েছিল। ‘ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর’ নামের এক প্যালেস্তিনীয় জঙ্গি গোষ্ঠীর আটজন সদস্য মিলে সন্ধ্যা নামার ঠিক আগে আগে ঢুকে পড়েছিল অলিম্পিক ভিলেজে। তাদের হাতে ছিল কালাশনিকভ। সঙ্গে ছিল গ্রেনেডও। আর লক্ষ্য ছিল ইজরায়েলি অ্যাথলিটরা। একজন ওয়েটলিফটার ও একজন কুস্তি কোচকে ঘটনাস্থলেই খুন করে জঙ্গিরা। অপহরণ করে নেয় ৯ জনকে। তাঁদের মধ্যে খেলোয়াড়দের পাশাপাশি ছিলেন কোচরাও। সকলকে পণবন্দি রেখে জঙ্গিরা দাবি করে ইজরায়েলের হাতে বন্দি ২৩৪ জন পণবন্দিকে ছাড়লে তবেই মুক্তি দেওয়া হবে অপহৃতদের।
গোটা বিশ্ব শিউরে উঠেছিল এই ঘটনায়। অলিম্পিকের ইতিহাসে একেবারে নজিরবিহীন। লাইভ টেলিভিশনে ৯০ কোটি মানুষের চোখ ছিল অলিম্পিক ভিলেজের দিকে। শেষপর্যন্ত বন্দিদের উদ্ধারে গুলির লড়াই শুরু করে জার্মানি (তৎকালীন পশ্চিম জার্মানি) পুলিশ। শেষ পর্যন্ত ৮ জন জঙ্গির মধ্যে ৫ জনেরই মৃত্যু হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাকি ৯ পণবন্দি ও এক জার্মান পুলিশ অফিসারের মৃত্যু আটকানো যায়নি। এই ঘটনাই ‘মিউনিখ ম্য়াসাকার’ নামে পরিচিত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.