দেবাঞ্জলি রায়, মস্কো: যুদ্ধ ঘোষণার পর মস্কোয় এসে নেমেছি। উদ্দেশ্য বরফে জমে থাকা বৈকাল হ্রদের উপর গাড়িতে ভ্রমণ। কিছুদিন আগেই একমাস ধরে সাইবেরিয়ায় গাড়িতে ঘুরেছিলাম। তখন বৈকাল হ্রদে স্টিমারে করে ঘুরেছি। যুদ্ধের মধ্যে মস্কো পৌঁছে দেখলাম, পরিস্থিতি আগের মতোই স্বাভাবিক। যুদ্ধ নিয়ে কারও তাপ-উত্তাপ চোখে পড়ছে না।
মস্কো থেকে যে উড়ানে করে বৈকাল হ্রদের উপর তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ ওলখনে এলাম, সেটির একটি সিটও খালি ছিল না। বিদেশি পর্যটকে পুরো উড়ান ভর্তি। রাশিয়া (Russia) হল ইউরোপের সবচেয়ে বড় পর্যটনকেন্দ্র। সারা বছর এই দেশে পর্যটক ভর্তি থাকে। কোভিড ভীতি কেটে যাওয়ায় এবার রাশিয়ায় থিক থিক করছে পর্যটক। যুদ্ধ নিয়ে কারও মাথাব্যথাও নেই। যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়ায় বিপদে পড়বেন, এমন আশঙ্কাও কোনও পর্যটকের মধ্যে দেখতে পেলাম না।
গত কয়েকবছরে তিনবার মস্কো আসায় এখানকার কয়েকটি বাঙালি পরিবারের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তাঁদের কাছে জানলাম, যুদ্ধ কেউ না চাইলেও ইউক্রেন হামলা (Russia-Ukraine War) নিয়ে পুতিনকে কেউ দোষ দিতেও রাজি নয়। পুতিন যথেষ্ট ‘ব্যাক আপ’ পরিকল্পনা রেখেই ইউক্রেনে হামলা চালিয়েছেন বলে এঁদের অভিমত। ২০১৭ সাল থেকে এই হামলার পরিকল্পনা বলে তাঁরা জানাচ্ছেন। রাশিয়ার দীর্ঘকালীন নিরাপত্তার প্রয়োজনে এই হামলা অনিবার্য বলেও মস্কোবাসীর বড় অংশের অভিমত।
যুদ্ধের কোনও অভিঘাত তাদের উপরে পুতিন পড়তে দেবেন না বলেও মস্কোবাসীর দৃঢ় বিশ্বাস। বৈকাল হ্রদের উপর যে হোভারক্র্যাফটে ঘুরছিলাম, তার চালক দেখলাম আদৌ জানেন না যে, ইউক্রেন সীমান্তে যুদ্ধ চলছে। আমাদের কাছ থেকেই তিনি যুদ্ধের বিষয়টি প্রথম শুনলেন। রুশিদের বড় অংশের বক্তব্য, আমেরিকার প্ররোচনাতেই সমস্ত গন্ডগোল তৈরি হচ্ছে। পুতিনকে (Vladimir Putin) কেউ যুদ্ধবাজ বা হামলাকারী বলতে রাজি নন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.