সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২। ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে বাঁধ ভাঙা জলের মতো ঢুকে পড়ে রাশিয়ার হানাদার ফৌজ। মুহুর্মুহু কামানের গর্জনে কেঁপে ওঠে প্রাক্তন সোভিয়েত দেশটি। তারপর পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় ন’মাস। ‘গোলিয়াথ’ পুতিন বাহিনীকে রীতিমতো নাকানিচোবানি খাইয়েছে ইউক্রেনের সেনা। একর পর এক অধিকৃত এলাকা হাতছাড়া হয়েছে রাশিয়ার। এখনও পর্যন্ত নাকি যুদ্ধক্ষেত্রে হতাহত হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ রুশ সেনা!
সম্প্রতি ইউক্রেন নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন আমেরিকার জয়েন্ট চিফ অফ স্টাফ বা সেনাপ্রধান জেনারেল মার্ক মাইলি। তাঁর দাবি, ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রায় ১ লক্ষ সেনা হতাহত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দেশটির ৪০ হাজার সাধারণ মানুষের। গত বুধবার এক সংবাদমাধ্যমে তিনি দাবি করেন, ইউক্রেনের লক্ষাধিক সেনা হতাহত হয়েছে। দুই দেশের এহেন বিপুল ক্ষয়ক্ষতির জেরে শীতের মরশুমের আগে কিয়েভ ও মস্কো আলোচনার টেবিলে বসতে পারে বলেও দাবি করেছেন তিনি। মার্কিন সেনাপ্রধান বলেন, “যখন সুযোগ তৈরি হয়েছে তখন তার ব্যবহার করা উচিত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে তিনি উল্লেখ করেন যে সেবারও সময় মতো আলোচনা শুরু না হওয়ায় লক্ষ লক্ষ সৈনিককে মৃত্যুর মুখে পড়তে হয়।
এদিকে, কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর খেরসন (Kherson) থেকে সেনা সরাচ্ছে রাশিয়া। যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ দক্ষিণ ইউক্রেনের এই শহরটি দু’দেশের কাছে কৌশলগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারপরেও এখান থেকে সেনা প্রত্যাহার করছে রাশিয়া। এপ্রসঙ্গে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেউ সইগু জানিয়েছেন, এবার থেকে রুশ সেনা নাইপার নদীর পশ্চিম পাড় থেকে কাজ করবে। এই বিষয়ে মার্কিন জেনারেল মাইলি জানান, সেনা সরানো খুব সহজ প্রক্রিয়া নয়। এতে অনেক সময় লাগে। এখনও পর্যন্ত নাইপার নদীর উত্তরে প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার রুশ সেনা মোতায়েন রয়েছে। তবে এই বিশাল ক্ষতি সত্ত্বেও ইউক্রেনে লক্ষ্য হাসিল করতে পারেনি মস্কো।
উল্লেখ্য, ইউক্রেনের (Ukraine) চারটি রুশ অধিকৃত অঞ্চল-ডোনেৎস্ক, লুহানস্ক (একত্রে দোনবাস), জাপরজাই ও খেরসন ‘গণভোটে’র মাধ্যমে রুশ ভূখণ্ডের সঙ্গে এক করে দিয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু সেসব অঞ্চল থেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে অন্তত পঞ্চাশ লক্ষ মানুষ। এই বিষয়টি আগেই স্বীকার করেছিলেন রুশ নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান নিকোলাই পেত্রোশেভ। তবে, কীভাবে এবং কোন সময় এই বিপুল জনস্রোত রাশিয়ায় প্রবেশ করেছে সেই বিষয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি তিনি। রুশ অধিকৃত ইউক্রেন থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের দিকে ‘বিশেষ নজর’ দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। পেত্রোশেভ আরও জানান, স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এলে শরণার্থীদের নিজের বাড়িতে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করবে মস্কো।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.