সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ট্যাটু করা অনেকেরই নেশা। হাত-পা থেকে শুরু করে সারা শরীরে ট্যাটু করিয়েছেন, এমন মানুষের অভাব নেই দুনিয়ায়। কিন্তু তাই বলে চোখের মণিতে ট্যাটু! শুনেই অনেকে চমকে উঠবেন। কিন্তু এমন ঘটনা সত্যিই ঘটে। বিখ্যাত র্যাপ আর্টিস্ট পোপেক তার প্রমাণ। তিনি চোখের মণিতে ট্যাটু করান। আর তা তাঁর জনপ্রিয়তা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। পোপেকের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এবার চোখের মণিতে ট্যাটু করান এক পোলিশ মডেল। কিন্তু ফল হয় বিপরীত।
পোল্যান্ডের ওই মডেলের নাম আলেকজান্দ্রা। পোপেককে দেখেই চোখের মণিতে ট্যাটু করার বাসনা জাগে তাঁর। একরকম ঝোঁকের বশেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। ট্যাটু আর্টিস্টের কাছে চলেও যান। আইবল ট্যাটু বা স্কেলেরাল ট্যাটু তো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজ। চোখের মণির সাদা অংশে করা হয় ট্যাটু। ফলে চোখের রং সম্পূর্ণ বদলে যায়। এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে কিন্তু অসম্মত হননি ওই ট্যাটু আর্টিস্ট। এদিকে মণির মধ্যে ট্যাটু বানিয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন আলেকজান্দ্রাও।
কিন্তু সমস্যা শুরু হয় কয়েকদিন পর থেকে। দুই চোখেই অসহ্য যন্ত্রণা হতে থাকে আলেকজান্দ্রার। ছুটে যান ট্যাটু আর্টিস্টের কাছে। কিন্তু ততদিনে তির হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। ট্যাটু আর্টিস্ট তাঁকে বোঝাতে থাকেন, এমন একটু ব্যথা হবে। ব্যথা কমানোর জন্য তিনি পেইনকিলারও দেন। কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি। চোখে ভয়ানকভাবে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। তখনই সামনে আসে এক মারাত্মক তথ্য। শরীরে যে কালি দিয়ে ট্যাটু করা হয় সেই কালি দিয়েই চোখে ট্যাটু এঁকেছিলেন আর্টিস্ট। এই তথ্য সামনে আসার পর ট্যাটু আর্টিস্টকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আপাতত তাঁর ঠাঁই হয়েছে শ্রীঘরে।
এদিকে দিন দিন চোখের অবস্থা শোচনীয় হতে থাকে আলেকজান্দ্রার। শরীরের কালি চোখে ব্যবহার করার ফলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে দেরি হয়নি। তিনবার অস্ত্রোপচারও হয়ে গিয়েছে তাঁর চোখে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ ফিকে হয়ে আসতে থাকে আলেকজান্দ্রার। একটা চোখের দৃষ্টিশক্তি তো পুরোপুরি চলে গিয়েছে। অন্য চোখটির অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। সেটির দৃষ্টিশক্তি চলে যেতেও আর বেশি দেরি নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এমন অবস্থায় পড়ে বেশ আতঙ্কেই দিন কাটাচ্ছেন আলেকজান্দ্রা। অক্ষেপ করে বলছেন, ‘তবু তো এখনও অস্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছে। ডাক্তাররা বলেছেন, যে কোনওদিন পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যাব। আমার গোঁয়ার্তুমির জন্যই এমন হল।’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.