সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন দুই আগে ঘাস কাটতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানের এক কিশোর। পরে তার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় লাহোরের চিড়িয়াখানায় সিংহের এনক্লোজারের ভিতর থেকে। ঘটনার দায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের উপরেই চাপাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের উদাসীনতার জন্যেই এমন ঘটনা বলে অভিযোগ কিশোরের পরিবারের।
বছর সতেরোর মহম্মদ বিলাল লাহোরের একটি গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ গৃহপালিত পশুদের খাবারের জন্য ঘাস কাটার জন্য সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তারপর আর বাড়ি ফেরেনি। ওইদিন রাতেই লাহোরের সবচেয়ে পুরনো চিড়িয়াখানার কর্মীদের কাছে ছেলেটির ব্যাপারে খোঁজখবর চান গ্রামের বাসিন্দারা। কিন্তু সেসময় তাঁরা কোনও খোঁজ দিতে পারেননি। দেবেনই বা কীভাবে? বিশাল জায়গাজুড়ে হিংস্র সিংহদের জন্য রাখা এনক্লোজারে যে কেউ ঢুকে পড়তে পারে, তা তো ভাবনার মধ্যেই ছিল না।
কিন্তু দিন দুই পর খাবার দিতে সিংহের এনক্লোজারের কাছে যেতেই চিড়িয়াখানার কর্মীদের ভুল ভাঙে। দেখা যায়, এনক্লোজারের নির্দিষ্ট সীমার ভিতরে একজনের ক্ষতবিক্ষত দেহ। হাড়, খুলি ছড়ানো। গায়ের জামাও পড়ে রয়েছে আরেক পাশে। যা দেখে শিউড়ে ওঠেন তাঁরা। বুঝতেই পারেন, কার কীর্তি। চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর চৌধুরি শফকতের কথায়, “রাতের বেলায় ওরা যখন ছেলেটির খোঁজ করেছিল, আমরা বলেছিলাম যে রাতে চিড়িয়াখানার ভিতরে খোঁজ পাওয়া মুশকিল। কিন্তু পরে যে ওকে এভাবে খুঁজে পাব, ভাবতে পারিনি।” চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক অনুমান, ঘাস কাটতে কাটতে বিলাল সিংহের খাঁচার দিকে এগিয়ে গিয়েছিল। তারপর রাতের অন্ধকারে বুঝতে না পেরে সীমানা পেরিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ে। হিংস্র পশুরাজও সামনে মানুষ দেখে নিজের উদরপূর্তির সুযোগ ছাড়েনি। তার দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই বোঝা যাবে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ।
তবে বিলালের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর জন্য পুরোপুরি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, লাহোরের এই চিড়িয়াখানায় সিংহ সাফারি হয়। তবে ভ্রমণার্থীদের জন্যই যথাযথ নিরাপত্তা নেই। প্রবেশপথে তাদের নজরদারি নেই বলেই বিলাল ঘুরতে ঘুরতে চিড়িয়াখানায় ঢুকে পড়েছিল। তারপরও চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনও কর্মী বা আধিকারিক সেদিকে নজর দেননি। বাড়ির ছেলের মৃত্যুতে শোকের পাশাপাশি ক্ষোভও বাড়ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.