সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বারবারা জ্যাবরিকা। অপহরণের অভিযোগে অনড় থেকে সোমবার পুলিশের কাছে ‘বান্ধবী’র নাম নিজেই ফাঁস করলেন মেহুল চোকসি। এখানেই শেষ নয়, পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে পড়তে পড়তে চাঞ্চল্যকর তথ্য দাবি করলেন অভিযুক্ত ভারতীয় ব্যবসায়ী। ১৪ হাজার কোটি টাকার পিএনবি কেলেঙ্কারিতে (PNB Scam) অভিযুক্ত মেহুল চোকসির অভিযোগ, জ্যাবরিকাই অপহরণের হোতা। এমনকী, যে নৌকা করে তাঁকে ডোমিনিকায় আনা হয়েছিল, সেখানে তিন জন ভারতীয় ছিলেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
গত ২৩ মে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ অ্যান্টিগুয়া থেকে নিখোঁজ হন মেহুল চোকসি। এই ঘটনায় অপহরণের অভিযোগ করেছিলেন মেহুলের আইনজীবী। এদিন, ডোমিনিকা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে তাতেই সিলমোহর দিলেন ৬২ বছরের এই ভারতীয় ব্যবসায়ী। মেহুলের অভিযোগ, তাঁর অপহরণের মূল চক্রী বারবরা জ্যাবরিকা। তাঁর অনুরোগে গত ২৩ মে স্থানীয় সময় বিকেল সোয়া পাঁচটায় জ্যাবরিকার বাড়ি যান মেহুল। মদ্যপানের অছিলায় মেহুলকে খানিকক্ষণের জন্য বসতে বলা হয়। সেই সময় তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে আট থেকে ১০ জন ‘পেশীবহুল’ ব্যক্তি। প্রথমে একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, ভারতীয় ব্যবসায়ীর উপর ‘হামলা’ চালান অ্যান্টিগুয়া পুলিশের কয়েকজন। যদিও এদিন ডমিনিকা পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে সেই তথ্য নেই। অভিযোগ পত্রে মেহুলের দাবি, যারা তাঁর মুখে, বুকে এবং হাতে আঘাত করে। ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তাঁর মোবাইল ফোন এবং রোলেক্স ঘড়ি। আর এই গোটা ঘটনায় নীরব দর্শক ছিলেন বারবরা। অভিযোগ, সাহায্য তো দূরের কথা, উল্টে ওই দুষ্কৃতীদের মদত দিয়েছিলেন জ্যাবরিকা।
‘বান্ধবী’র নাম প্রকাশ্যে আসার পর জ্যাবরিকার বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে অ্যান্টিগুয়া সরকার। তবে, এদিনও খারিজ করা হয়েছে মেহুল ‘অপহরণ’ তত্ত্ব। ডোমিনিকা পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে ভারতীয় ব্যবসায়ীর দাবি, তাঁকে দু’টি নৌকা করে ডোমিনিকা নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর দ্বিতীয় নৌকায় তিনি তিনজন ভারতীয়কে দেখতে পান। যাঁরা জ্যাবরিকার সঙ্গে কথা বলছিলেন। সেই কথোপকথনে নাকি উঠে এসেছিল, এক ভারতীয় রাজনীতিকের নির্দেশের কথা। পুলিশের কাছে অভিযোগ, তাঁর নির্দেশেই নাকি মেহুল চোকসিকে অ্যান্টিগুয়া থেকে ডোমিনিকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। পুলিশের কাছে মেহুল চোকসির দায়ের করা অপহরণের অভিযোগকে এদিন উড়িয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা। তাঁদের পাল্টা দাবি, কিউবা পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে এখন গল্প ফাঁদছেন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়া ভারতীয় ব্যবসায়ী। একটি সূত্রে দাবি, সমুদ্র পথে অ্যান্টিগুয়া থেকে কিউবা পালানোর ছক কষেছিলেন মেহুল চোকসি। চোকসিকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন অ্যান্টিগুয়ায় তাঁর বিশেষ বন্ধু গোবিন। তাঁর মদতেই কিউবাতে সেফ হাউসে থাকার পরিকল্পনা করেছিল পলাতক হীরে ব্যবসায়ী।
এদিকে, তাঁর সেই ‘বান্ধবী’র আবার অভিযোগ, নাম ভাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে ফ্লার্ট করেছিলেন মেহুল। শুধু তাই নয়, তাঁকে নাকি নকল হীরের আংটিও দিয়েছেন মেহুল চোকসি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.