ফাইল ফটো
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতে নাশকতা চালাতে জঙ্গিদের জন্য অর্থ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে ব্রিটেন, উপসাগরীয় দেশগুলিতে এবং উত্তর আফ্রিকার কয়েকটি দেশে গিয়েছিল জইশ প্রধান মাসুদ আজহার। ১৯৯৪ সাল থেকে পরবর্তী এক দশক ধরে বিভিন্ন সময়ে মাসুদ এই দেশগুলি সফর করেছিল পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে। তবে সে মোটেই আশাব্যঞ্জক ফল পায়নি।
[পণের জন্য বিয়ের রাতেই বধূকে ধর্ষণ স্বামী-দেওরের]
সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, ওই সময় মাসুদ শারজা, দুবাই, সৌদি আরবে গিয়ে প্রচুর অর্থসংগ্রহের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মাত্র ১৫ লক্ষ পাকিস্তানি টাকা জোগাড় করতে পেরেছিল। পরে মাসুদ উপসাগরীয় দেশগুলিতে বসবাসকারী প্রবাসী পাকিস্তানিদের কাছেও হাত পাতে। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকেও অর্থসংগ্রহ করতে পেরেছিল সামান্যই। পরবর্তীকালে ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়ার পর তাকে টানা জেরা করেছিল গোয়েন্দারা। ওই জেরায় মাসুদ কবুল করেছিল, বিভিন্ন দেশে তার যাতায়াতের খরচ জুগিয়েছিল লন্ডনের সাউথহলের মসজিদের প্রধান মৌলবি মুফতি সিমাইল। মৌলবি সিমাইল আসলে গুজরাতের বাসিন্দা। পরে সিমাইল চলে যায় পাকিস্তানের করাচিতে। সেখানে পাক নাগরিকত্ব নেয় এবং ‘দারুল-ইপথা-ওয়াল-ইরশাদ’ বিষয়ে পড়াশোনা করে। তারও পরে সে চলে যায় লন্ডনে। তার সঙ্গে যোগাযোগ রেখেই মাসুদ লন্ডনের আরও কয়েকজন মৌলবির সঙ্গে কথা বলে। এই মৌলবিরা সবাই মঙ্গোলিয়া এবং আলবেনিয়ায় মাদ্রাসা ও মসজিদ তৈরিতে বিপুল বিনিয়োগ করেছিল। তাদের কাছ থেকে কাশ্মীরে জেহাদ চালাতে প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করে মাসুদ। সেই অর্থের বিনিময়ে বিপুল অস্ত্রের জোগান দেওয়া হয় কাশ্মীরি জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনকে। এরপরে ১৯৯৪ সালে ভুয়া পর্তুগিজ পাসপোর্ট নিয়ে দিল্লি হয়ে কাশ্মীর পৌঁছয় মাসুদ। ১৯৯৪ সালের জানুয়ারিতেই বাংলাদেশের সিলেট এবং ঢাকাতেও গিয়েছিল মাসুদ।
এদিকে, মাসুদ আজহারকে নিয়ে নয়া ‘ইতিবাচক বার্তা’ দিল চিন। রবিবার চিন জানিয়েছে, ভারতের সমস্যা এবং ভারতবাসীর সংবেদনশীলতার কথা চিন জানে। কিন্তু আলোচনার মাধ্যমে নিশ্চয় এ ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে সমস্যার সমাধান হবে। এ ব্যাপারে চিন আশাবাদী। ভারতে নিযুক্ত চিনের রাষ্ট্রদূত লুও ঝাওহুই এদিন বলেন, এই সমস্যার সমাধান করা হবে। গত সপ্তাহে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে শেষ মুহূর্তে মাসুদ আজহারকে নিয়ে ভেটো দেয় চিন। বেজিং-এর তরফ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, সময় কেনার জন্য প্রস্তাবটিকে ‘টেকনিক্যাল ব্লক’ বা ‘পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে বাধা’ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পাকাপাকিভাবে বাতিল করা হয়নি। রবিবার চিনা রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে হোলির আয়োজন করা হয়েছিল। ভারতের অন্যতম জাতীয় উৎসব উপলক্ষে ভারতবাসীকে শুভেচ্ছা জানান চিনা রাষ্ট্রদূত। সেখানেই চিনা রাষ্ট্রদূত বলেন, “রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ১২৬৭ নম্বর কমিটির কাছে মাসুদ আজহার সংক্রান্ত প্রস্তাব নিয়ে ভারত-চিন মতবিরোধের সমাধান করা হবে। এটি শুধুমাত্র পদ্ধতিগত বাধা। তবে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সময় রয়েছে। বিশ্বাস করুন, এর সমাধান করা হবে। ভারতের দাবি ও সংবেদনশীলতার কথা চিন জানে। আশা করি শীঘ্রই আলোচনার মাধ্যমে এর সমাধান করা হবে।” এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে ২০০৯, ২০১৬ এবং ২০১৭-তে একই ধরনের প্রস্তাবে মাসুদকে রক্ষাকবচ দিয়ে ভেটো দিয়েছিল চিন। স্বার্থরক্ষা করেছিল পাকিস্তানের।
[প্রয়াত গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিকর, শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.