সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া ও ইউক্রেনের (Ukraine) মধ্যে চলা যুদ্ধ মনে করিয়ে দেয় ডেভিড বনাম গোলিয়াথের লড়াই। দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে রুশ ফৌজকে ঠেকিয়ে রেখেছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। বিশেষ করে মারিওপোল শহরে ভূতে পাওয়া মানুষের মতো লড়াই করছেন ইউক্রেনীয় জওয়ানরা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়তো হবে না। তারা জানিয়েছে, দ্রুত ফুরিয়ে আসছে অস্ত্র। অনেকেই মারাত্মক জখম। এবার হয়তো শেষ লড়াই হবে। হয় মৃত্যু, নয় বন্দিশালা রয়েছে ভাগ্যে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রাশিয়া। কিয়েভ, খারকভ, ওডেসা, মারিওপোল, ইরপিন-সহ শহরে ভয়াবহ হামলা চালায় রুশ বাহিনী। শুরুর দিকে রাজধানী কিয়েভের অনেকটাই কাছে পৌঁছে গেলেও ইউক্রেনীয় ফৌজের পালটা মারে পিছিটে এসে এবার পূর্ব ইউক্রেনের দোনবাস অঞ্চলে নতুন করএ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। রুশ বাহিনীর নিশানায় রয়েছে মারিওপোল। নিরন্তর রুশ হানায় গোটা শহরময় ছড়িয়েছিটিয়ে পড়ে রয়েছে লাশ। কার্যত মৃতনগরীতে পরিণত হয়েছে ইউক্রেনের দক্ষিণের বন্দর শহরটি। তবে এখনও শহরটির দখল রয়েছে জেলেনস্কির বাহিনীর হাতেই।
মারিওপোলে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনের ৩৬তম মেরিন ব্রিগেড। সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “৪৭ দিন ধরে বন্দর রক্ষায় সব রকম প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এবার আর পিছু হটা ছাড়া রাস্তা নেই। শুধু অস্ত্র বাড়ন্ত নয়। প্রায় অর্ধেক সেনা আহত। এখনও অঙ্গহানি হয়নি যাঁদের, তাঁরা এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।” ইতিমধ্যেই মারিওপোল ঘিরে ফেলেছে রুশ সেনা। তারাও জানিয়েছে, মারিওপোলে এখন আজভস্টাল লৌহ ও ইস্পাত কেন্দ্র এবং বন্দর দখলের লড়াই চলছে। এদিকে, ৩৬ মেরিন ব্রিগেডের অনেক সৈনিকের গলায় শোনা গিয়েছে আক্ষেপের সুর। তাঁদের অভিযোগ, অস্ত্র ও রসদ পাঠানোর কোনও ব্যবস্থা করছেন না ফৌজের কর্তারা। তাঁরা একপ্রকার ডহরএই নিয়েছেন যে মারিওপোল থেকে কেউই জীবিত ফিরবে না।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই মারিওপোলে হাজার হাজার লাশ লুকোচ্ছে রাশিয়া বলে অভিযোগ করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। জেলেনস্কি দাবি করেন, বন্দর শহর মারিওপোলে ত্রাণ পৌঁছতে দিচ্ছে না রুশ ফৌজ। কারণ, সেখানে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে রেখেছে রাশিয়া। সেই খবর গোপন রাখতেই শহরটিকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে তারা। তিনি জানিয়েছেন, মারিওপোলে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে রাশিয়া। এত মানুষকে মারার পরেও আক্রমণ থামায়নি। হানায় বিপর্যস্ত তিনশোরও বেশি হাসপাতাল। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছেও অস্ত্র সাহায্য চেয়েছেন জেলেনস্কি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.