সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ফিরেছিল ছেলে৷ বলেছিল, স্যার তাকে থাপ্পড় মেরেছেন৷ ব্যস, একথা শুনেই মাথায় খুন চেপে যায় বাবার৷ সেই রাগ থেকে যা করলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার এক বাসিন্দা, তা দেখে শিহরিত হয়ে উঠছেন প্রতিবেশীরাই৷
ছেলের অভিযোগের মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যেই একটা AK 47 রাইফেল হাতে নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লেন৷ আর পৌঁছে গেলেন স্কুলে৷ ঢুকেই হুংকার দিলেন – ‘কে মেরেছে আমার ছেলেকে? তাকে আমি এখনি শেষ করব৷’ বছর সাতাশের ক্রিস্টোফার ফ্রিম্যানকে এই অবস্থায় দেখে আটকে দেন লেক মিডল স্কুলের নিরাপত্তা কর্মীরা৷ এরপর তাঁকে তুলে দেওয়া হয় পুলিশের হাতে৷ স্কুলচত্বরে বন্দুক নিয়ে প্রবেশের অপরাধে পুলিশ ফ্রিম্যানকে গ্রেপ্তার করেছে৷ তাঁর কাছে মিলেছে একটি গুলি ভরতি রাইফেল৷ পুলিশি জেরায় ফ্রিম্যান জানিয়েছেন, গত বছর তিনি বন্দুকটি কিনে রেখে দিয়েছিলেন৷ কোথাও ব্যবহার করেননি৷ কিন্তু ছেলের মুখে স্কুল শিক্ষকের অত্যাচারের খবর পেয়েই নাকি তাঁর মনে পড়েছে কিনে রাখা আগ্নেয়াস্ত্রের কথা৷ আর সেটি ব্যবহার করতেই চলে গিয়েছিলেন স্কুলে৷ অভিভাবকের এহেন আচরণে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, দিন কয়েকের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফ্লোরিডার ওই স্কুল৷ ফ্রিম্যানের মামলা আদালতে পৌঁছেছে৷ ৭৫ হাজার ডলার বন্ডে তাঁকে জামিনে মুক্তি দিতে রাজি আদালত৷ কিন্তু এত অর্থ দিয়ে তাঁর জামিন নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে ফ্রিম্যানের পরিবার৷ অতএব, ছেলেকে কথায় স্কুল শিক্ষককেই শিক্ষা দিতে গিয়ে এখন নিজেই বিপাকে ক্রিস্টোফার ফ্রিম্যান৷
আমেরিকায় আগ্নেয়াস্ত্র আইনটি এমনিতেই বিতর্কিত৷ আত্মরক্ষার স্বার্থে প্রত্যেক নাগরিকের আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকার আইনসম্মত৷ রীতিমতো বিল পাশ করিয়ে এই আইন চালু করা হয়েছিল৷ কিন্তু আইনে ফাঁক এই যে, হাতে আগ্নেয়াস্ত্র আছে বলেই যে কেউ যে কোনও সময় তা ব্যবহার করে ফেলেন৷ ঘটিয়ে ফেলেন অপ্রীতিকর ঘটনা৷ যেমন করতে যাচ্ছিলেন ক্রিস্টোফার ফ্রিম্যান৷ ফলে আমেরিকার এই বন্দুক আইনটি বহুবার সমালোচনার মুখে পড়েছে৷ আইনটি সংশোধনের দাবিও উঠেছে বহুবার৷ আগ্নেয়াস্ত্র থাকলেও, তা যখনতখন ব্যবহার করা যাবে না – এই মর্মে সংশোধনী আনতে চাওয়া হয়েছিল৷ তবে এখনও তা কার্যকর হয়নি৷আর সেই সুযোগেই এধরনের হিংসার ঘটনা অহরহ ঘটেই চলেছে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.