সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের ধর্মের নামে নারকীয় ঘটনার সাক্ষী থাকল পাকিস্তান (Pakistan)। আদালত কক্ষেই ধর্ম অবমাননা আইনে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করল এক ধর্মোন্মাদ হামলাকারী।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারের আদালতে শুনানি চলাকালীন তাহির আহমেদ নাসিমকে হত্যা করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, তাকে লক্ষ্য করে ছ’টি গুলি চালানো হয়। এই ঘটনায় হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই পুলিশি হেফাজতে ছিলেন তাহির আহমেদ নাসিম। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিজেকে নবী দাবি করে ধর্মের অবমাননা করেছেন তিনি। নাসিমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ‘ব্লাসফেমি আইনের’ ২৯৫-এ, ২৯৫-বি এবং ২৯৫-সি ধারা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়। বলা হয়েছে, নিজেকে নবী দাবি করে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হজরত মহম্মদকে অবমাননা করেছেন তিনি। এই বিতর্কিত আইন অনুযায়ী এ অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। এদিন, আদালতে মামলার শুনানি চলার মধ্যেই তাহির আহমেদ নাসিমকে গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার দায় স্বীকার করে হামলাকারী জানিয়েছে হজরত মহম্মদের অপমানের বদলা নিতেই এই কাজ করেছে সে।
উল্লেখ্য, গত বছর মৌলবাদীদের হাত এড়াতে পাকিস্তান ছেড়ে কানাডায় পাড়ি দিয়েছিলেন আসিয়া বিবি নামের এক পাক খ্রিস্টান। তাঁর বিরুদ্ধেও ইসলাম অবমাননার অভিযোগ এনেছিলেন এক প্রতিবেশী। তবে আদালত মুক্তি দিলেও দেশটির ধর্মোন্মাদ জনতার একাংশ তাঁর মৃত্যুর দাবিতে সরব হয়ে ওঠে। শেষমেশ প্রাণ বাঁচাতে সপরিবারে নিজের দেশ ছাড়তে হয় তাঁকে। সংখ্যালঘুদের নিশানা করতে বরাবরই পাকিস্তানে ধর্মদ্রোহ আইন ব্যবহার করে আসছে মৌলবাদীরা। বহুক্ষেত্রে হিন্দু বা খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতে ইসলাম অবমাননার অভিযোগ আনে পড়শি মুসলিমরাই। এমনই এক চক্রান্তের শিকার হয়েছেন আসিয়া বিবি। ২০০৯ সালের জুনের ঘটনা। শেখপুরা এলাকায় গাছ থেকে ফল পাড়তে গিয়ে অন্য মহিলাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় চার সন্তানের জননী আসিয়া বিবির। প্রতিবেশীরা অভিযোগ করেন, ঝগড়াঝাঁটির সময়ে মহম্মদকে অপমান করেছেন আসিয়া। এই অভিযোগে ২০১০ সালে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেয় পাকিস্তানের নিম্ন আদালত। তারপর বিশ্বজুড়ে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়তে হয় পাকিস্তানকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.