লন্ডনের ভারতীয় হাই কমিশনের আলোচনাচক্রে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
কুণাল ঘোষ ও কিংশুক প্রামাণিক (লন্ডন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী): লন্ডনের ভারতীয় হাই কমিশনের আলোচনাচক্রে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মুখে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা। ভারত-ব্রিটেনের, কলকাতা-লন্ডনের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে গিয়ে উল্লেখ করলেন বাংলার ইতিহাসে সিস্টার নিবেদিতা থেকে মাদার টেরেসার অবদানের কথা। তাঁর কথায় উঠে এল, বাংলায় দুর্গাপুজো থেকে বড়দিন উদযাপনের কথা। সবমিলিয়ে বিদেশ বিভূঁইয়ে দাঁড়িয়েও সম্প্রীতির বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার সন্ধেয় লন্ডনের (London) ভারতীয় হাই কমিশনারের আমন্ত্রণে সাড়া দেন মমতা (Mamata Banerjee)। সেখানে আলাপচারিতায় উঠে আসে ভারত-ব্রিটেন সম্পর্কের ইতিহাস। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “ভারত-ব্রিটেনের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বহু পুরনো। কলকাতার সঙ্গেও লন্ডনের সম্পর্ক শতাব্দী প্রাচীন। স্বাধীনতার আগে কলকাতা ভারতের রাজধানী ছিল। কলকাতা এখনও সাংস্কৃতিক রাজধানী।” এরপরই তাঁর কথায় উঠে আসে, কীভাবে আয়ারল্যান্ডের নাগরিক সিস্টার নিবেদিতা কলকাতা তথা বাংলা তথা ভারতের জন্য প্রাণপাত করেছিলেন। কীভাবে স্বামীজির সঙ্গে তাঁর আত্মার বন্ধন গড়ে উঠেছিল। একইভাবে কলকাতার বুকে মাদার টেরেসার জনসেবার কথাও তুলে ধরেন তিনি। সঙ্গে স্মৃতিচারণা করে বলেন, প্রথমবার সাংসদ থাকাকালীন মাদার টেরেসার সঙ্গে কাজ করেছিলেন। মাদার যখনই কোনও সমস্যায় পড়তেন মমতার সঙ্গে আলোচনা করতেন। ক্ষমতায় না থেকেও যথাসাধ্য সাহায্য়ের চেষ্টা করতেন তিনি। মাদার টেরেসাকে সম্মান জানিয়ে নিউটাউনের ওয়্যাক্স মিউজিয়ামের নামকরণ করেছেন তাঁর নামেই। সিস্টার নিবেদিতার দার্জিলিঙের বাড়ি কিনে নিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই বাড়ি সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
It was a privilege to be hosted by Shri Vikram K. Doraiswami at India House, London, for a high tea reception.
The gathering brought together a diverse spectrum of voices united in their commitment to strengthening Bengal-Britain ties.
As we navigate a changing world,… pic.twitter.com/ZBfeQKyPNQ
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) March 24, 2025
নানা ধর্মের উৎসব উদযাপনের ক্ষেত্রেও বাংলা কতটা এগিয়ে তার খতিয়ানও বক্তব্যে তুলে ধরেন মমতা। জানান, ২৫ ডিসেম্বর, বড়দিন পালনের নিরিখে দেশের মধ্যে এগিয়ে বাংলা। পাশাপাশি বাংলার দুর্গাপুজোকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেসকো। সেই গর্বের ইতিহাসও এদিন তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি শিল্পায়ন ও বিনিয়োগে বাংলা কতটা এগিয়ে তাও স্পষ্ট করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। খেলাধুলোর সঙ্গে এ রাজ্যের অঙ্গাঙ্গী যোগের কথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি। সবমিলিয়ে বাংলা যে শিল্প-সংস্কৃতি-ধর্ম-ঐতিহ্যের পীঠস্থান তা বিদেশের মাটিতে সর্বতভাবে বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্পষ্ট করে দিলেন, কেন বাংলাই বিনিয়োগের জন্য আদর্শ স্থান।
প্রসঙ্গত, বঙ্গ রাজনীতিতে বিরোধীরা বারবার ধর্মের তাস খেলার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ। বিশেষ করে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রীর গায়ে সাম্প্রদায়িকতার কাদা লাগানোর চেষ্টা করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে লন্ডনে ভারতীয় হাই কমিশনে বসে মমতার সর্বধর্ম সমন্বয়ের এই বার্তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.