শিল্প সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
কুণাল ঘোষ ও কিংশুক প্রামাণিক (লন্ডন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী): কোথাও লালমাটি। তো কোথাও মালভূমি। আবার কোথাও পাহাড়। তার পাশেই চা বাগান। সঙ্গে নদী। হাজারও বৈচিত্র্যে ঘেরা বাংলা। সেখানে বসবাস করেন সব ধর্ম-বর্ণের নানা ভাষাভাষির মানুষ। তার ফলে বাংলার কোণায় কোণায় ঐক্যের মধ্যে বৈচিত্র্যর ছবিই ফুটে ওঠে। মঙ্গলবার লন্ডনের শিল্প বৈঠকের শুরুতে ছোট্ট একটি ভিডিওর মাধ্যমে সেকথাই যেন তুলে ধরা হল।
এদিন শিল্প বৈঠকের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলার শিল্পবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরেন তিনি। ব্রিটেনের শিল্পপতিদের বাংলায় বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান। এরপর ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। গোটা ভিডিও জুড়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভৈরব রাগের ‘ধ্বনিল আহ্বান’ গানটি শোনা যায়। ভিডিওটিতে হাওড়া ব্রিজ, দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিকে দেখানো হয়। উত্তরের চা শিল্পের টুকরো ছবি তুলে ধরা হয়েছে। তেমনই আবার দেখানো হয়েছে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর মতো প্রকল্প। দুর্গাপুজো থেকে নমাজ-সহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের টুকরো ছবি তুলে ধরে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা ছোট্ট ভিডিওয় দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কৃষি থেকে শিক্ষাক্ষেত্র, হাসপাতাল, তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রগুলির ছবিও দেখানো হয়। তুলে ধরা হয় বয়ন, ইস্পাত ও কয়লাশিল্পের ছবি। সাংস্কৃতিক পরিচিতি হিসাবে ছৌ নাচও দেখানো হয় ভিডিওতে। বাংলার নারী ক্ষমতায়নের বার্তাও দেওয়া হয় ভিডিওতে। পর্দায় বাংলার টুকরো ঝলক দেখে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত শিল্প সম্মেলনে উপস্থিত প্রায় সকলেই।
বাণিজ্যে বসতে লক্ষ্মী। বিনিয়োগ বাড়লেই আর্থিক উন্নয়নের পথে আরও দ্রুত এগোবে পশ্চিমবঙ্গ। লগ্নির সুফল পাবেন রাজ্যবাসী। এই ভাবনাকে পাথেয় করে প্রতি বছর বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আয়োজন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে দেশ-বিদেশের শিল্পপতিরা যোগ দেন। বিপুল বিনিয়োগও হয়। বাংলায় বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ যে রয়েছে, প্রতি বছরের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সাফল্যই তার প্রমাণ। এদিনের শিল্প বৈঠকের পর বিলেতের বিনিয়োগও আসবে বলেই আশা। উল্লেখ্য, এদিনের শিল্পবৈঠকে অংশ নেন চন্দ্রমোহন ধানুকা (এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান, ধানসিঁড়ি ভেঞ্চারস), হর্ষবর্ধন আগরওয়াল (প্রেসিডেন্ট, ফিকি, ভাইস চেয়ারম্যান, ইমামি গ্রুপস), হর্ষবর্ধন নেওটিয়া (চেয়ারম্যান, অম্বুজা নেওটিয়া গ্রুপ), কে কে বাঙ্গুর (গ্রাফাইট ইন্ডিয়া), মেহুল মোহানকা (এমডি, টেগা ইন্ডাস্ট্রিজ), প্রশান্ত বাঙ্গুর (চেয়ারম্যান, ফিকি, WBSC, ভাইস চেয়ারম্যান, শ্রী সিমেন্টস), প্রশান্ত মোদি (ভাইস চেয়ারম্যান ও এমডি, GEECL), রুদ্র চট্টোপাধ্যায় (এমডি, লক্ষ্ণী গ্রুপ, চেয়ারম্যান, OBEETEE), সঞ্জয় বুধিয়া (ম্যানেজিং ডিরেক্টর, প্যাটন ইন্টারন্যাশনাল), সত্যম রায়চৌধুরী (চ্যান্সেলর, সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়), শাশ্বত গোয়েঙ্কা (ভাইস চেয়ারম্যান, আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপ), তরুণ ঝুনঝুনওয়ালা (প্রেসিডেন্ট, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ), উজ্জ্বল সিনহা (এমডি, জেনেসিস অ্যাডভারটাইজিং), উমেশ চৌধুরী (ভাইস চেয়ারম্যান অ্যান্ড এমডি, টিটাগড় রেল সিস্টেমস), জ্যোতি ভিজ (ডিরেক্টর জেনারেল, ফিকি) এবং মৌসুমী ঘোষ (ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল, ফিকি)। বলে রাখা ভালো, এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে স্পেন এবং দুবাই সফরে গিয়েও শিল্প বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিপুল বিদেশি বিনিয়োগও আসে রাজ্যে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.