সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর আহত মালদ্বীপের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা সংসদের অধ্যক্ষ মহম্মদ নাশিদ (Mohamed Nasheed)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই ‘ভারতপন্থী’ নেতাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিস্ফোরণে নাশিদের এক দেহরক্ষী ও মালদ্বীপে থাকা অস্ট্রেলিয়ার এক ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে খবর।
বৃহ্স্পতিবার রাজধানী ম্যালের একটি ব্যস্ত এলাকায় বিস্ফোরণটি ঘটে। জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিজের গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন নাশিদ। সেই সময় পাশে রাখা একটি মোটরবাইকে প্রচণ্ড জোরে বিস্ফোরণ ঘটে। তাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ৫৩ বছরের নাশিদ। সেখান থেকে তাঁকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, একাধিক ক্ষত রয়েছে নাশিদের শরীরে। তবে এ নিয়ে বিশদে কিছু জানানো হয়নি। বিস্ফোরণে নাশিদ আহত হওয়ার পরই জরুরি ভিত্তিতে দেশের সংসদে অধিবেশন ডাকা হয়। মালদ্বীপের ইয়ুথ অ্যান্ড কমিউনিটি এমপাওয়ারমেন্ট মিনিস্টার আহমেদ মাহলুফ এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা বলেছেন। দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আরজি জানিয়েছেন তিনি। নাশিদকে খুন করার উদ্দেশ্যেই এই হামলা বলে প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। মালদ্বীপের প্রধানমন্ত্রী ইব্রাহিম মহম্মদ সোলিহ তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, “নাশিদের উপর হওয়া হামলা আসলে দেশটির গণতন্ত্রের উপর আঘাত।” এই বিস্ফোরণের তদন্তে অস্ট্রেলিয়ার পুলিশবাহিনীও থাকবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, বরাবরই ভারতপন্থী বলে পরিচিত নাশিদ। ফলে তাঁর উপর হামলায় রীতিমতো উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। ওই বছরই তাঁর সরকারের উচ্ছেদ ঘটে। ২০১৫ সালে ১৩ বছরের সাজা শোনানো হয় তাঁকে। এর নেপথ্যে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল বলেই মনে করেন দেশের রাজনৈতিক মহলের একাংশ। স্বাস্থ্যজনিত কারণে সেই সময় ব্রিটেনে তাঁকে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার অনুমতি দেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লা ইয়ামিন। দেশ ছাড়ার পর সেখানেই নির্বাসনে ছিলেন নাশিদ। ২০১৮ সালে ফের দেশে ফেরেন। ফের সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। চিনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়ার জন্য ইয়ামিন সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। বেজিংয়ের কাছে ইয়ামিন গোটা দেশ বন্ধক দিয়েছেন বলেও অভিযোগ তোলেন। এর পর ২০১৯ সালের নির্বাচনের পর সংসদের অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.