সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘একজন শিক্ষক, একজন শিশু, একটি বই এবং একটি কলম পৃথিবীটা বদলে দিতে পারে’ – এই বাক্য দিয়ে পৃথিবীর সকলের মন জয় করে ফেলেছিল পাকিস্তানি কিশোরী মালালা ইউসুফজাই৷ এটাই তাকে এনে দিয়েছিল নোবেল শান্তি পুরস্কার৷ তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর৷ এখন তিনি একুশের সদ্য যুবতী৷ পাকিস্তানে মৌলবাদীদের রক্তচক্ষুর শাসনাধীন জীবন ছেড়ে ব্রিটেনের মুক্ত হাওয়ায় স্থায়ী বাসিন্দা৷ সেইসঙ্গে একজন শিক্ষা প্রচারক হিসেবে ইতিমধ্যেই স্বপরিচিত মালালা৷ বিশেষত নারীশিক্ষা প্রসারে৷ কিন্তু সেই কাজেই এবার বাধার মুখে পড়লেন নোবেলজয়ী যুবতী৷
কানাডার কুইবেকে শিক্ষা প্রচারক হিসেবে এতদিন কাজ করতেন মালালা ইউসুফজাই৷ কিন্তু সম্প্রতি কুইবেকের শিক্ষাদপ্তর একটি বিতর্কিত আইন পাশ করেছে, যাতে উল্লেখ রয়েছে, কর্মক্ষেত্রে ধর্মীয় চিহ্নযুক্ত কোনও কিছু সঙ্গে রাখা চলবে না৷ পুলিশ অফিসার, আইনজীবী এবং শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য৷ মালালা নিয়মিত হিজাব পরেন, যা ইসলাম ধর্মের অন্যতম চিহ্ন৷ সেভাবেই তিনি কুইবেকে পড়াতে যেতেন৷ ফলে নতুন আইন অনুযায়ী, কুইবেকে তাঁর পড়ানো নিষিদ্ধ৷
এনিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে কুইবেক শিক্ষা দপ্তর৷ এমন আইনে খুশি নন অনেকেই৷ যদিও কুইবেকের শিক্ষামন্ত্রী জঁ ফ্রাঁসোয়া রবার্জের যুক্তি, ধর্মনিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্যই এই আইনটি পাশ করানো হয়েছে৷ এসবের মাঝে আবার সেই শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেই মালালার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে৷ যা বিতর্ক বাড়িয়েছে৷ জানা গিয়েছে, আইনটি পাশ হওয়ার পর তিনি ফ্রান্সে সফরে মালালার সঙ্গে দেখা করেন৷ সেসময় মালালাও ফ্রান্সেই ছিলেন৷ দু’জনের ছবি তিনি নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন৷
রবার্জের টুইটারে সেই ছবি দেখে সাংবাদিকরা স্বভাবতই তাঁর কাছে জানতে চান, আচমকা কুইবেকে মালালার পড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়া নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া কী? তাতে বেশ সপ্রতিভভাবে মন্ত্রী জানান, ‘আমি তাঁকে জানিয়েছি যে কুইবেকে তিনি পড়ালে আমরা সম্মানিত হব৷ কিন্তু যে কোনও উদার, সহিষ্ণু দেশে শিক্ষকরা কোনও ধর্মচিহ্ন সঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন, এরকম কোনও উদাহরণ নেই৷’ এর মাধ্যমেই তিনি বুঝিয়ে দিলেন, কুইবেকে পড়াতে হলে মালালাকে হিজাব ছেড়েই যেতে হবে৷ এনিয়ে অবশ্য নোবেলজয়ী মালালার কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.