ইনসেটে: গান্ধীজির সেই চশমাটি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিলামে উঠল একসময়ে মহাত্মা গান্ধীর (Mahatma Gandhi) ব্যবহৃত সোনার জল করা একটি চশমা! শুনতে অবাক লাগলেও ঘটনাটি সত্যি। দেশে ফিরে স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দেওয়ার আগে আফ্রিকায় ছিলেন গান্ধীজি। এবং তার আগে লন্ডনে পড়াশোনাও করেন। আর লন্ডনে পড়ার সময়েই একটি সোনার জল করা চশমা কেনেন তিনি। পরে আফ্রিকায় থাকাকালীন তা উপহার হিসেবে একজনকে দিয়ে দেন। এতদিন পর সেই চশমাটিই এবার এসেছে জনসমক্ষে।
তবে ভারতে নয়, সেটি মিলেছে ব্রিটেনেই (Britain)। সেখানকারই একটি সংস্থা চশমাটিকে নিলামে তুলেছে। এছাড়াও সঙ্গে থাকবে গান্ধীজির ব্যক্তিগত গুজরাটি ভাষায় লেখা একটি প্রার্থনার ডায়েরি, একটি চরকা- যা তিনি পরবর্তীতে ব্যবহার করতেন এবং কিছু চিঠি। তবে নজরে ওই চশমাটিই। ইতিমধ্যে ৬ হাজার পাউন্ড দামও উঠেছে সেটির। তবে মনে করা হচ্ছে, ২১ আগস্ট নিলামের শেষ দিন এই চশমার দাম উঠতে পারে ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার পাউন্ডও (Pound)। অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ৯ লাখ ৮০ হাজার থেকে ১৪ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। আরও জানা গিয়েছে, চশমার মূল নিলাম হবে আগামী ২১ আগস্ট। ইতিমধ্যে ভারত থেকেও বেশ কয়েকজন ক্রেতা সেটি কেনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।
দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের হ্যানহ্যামের ইস্ট ব্রিস্টল অকশনসের (East Bristol Auctions) তরফে রবিবার জানানো হয়েছে, মহাত্মা গান্ধীর এই চশমাটি পেয়ে তাঁরা খুবই অবাক হয়েছিলেন। এই চশমা পাওয়ার গল্পটিও ছিল একদম অন্যরকম। অকশন হাউসের লেটারবক্সে খামে মুড়ে কেউ এই চশমাটি রেখে গিয়েছিলেন। শুরুতে বুঝতে না পারলেও, পরে যখন ওই সংস্থা এটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব বুঝতে পারে তখন কিছুটা অবাকই হয়েছিলেন অকশন হাউসের কর্তৃপক্ষ।
ইস্ট ব্রিস্টল অকশনসের সঙ্গে যুক্ত অ্যান্ডি স্টো এই প্রসঙ্গে জানান, ‘‘এই চশমাটির ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম। যিনি আমাদের এটা দিয়েছেন তাঁর জিনিসটি ভাল লাগলেও, এর কোনও ঐতিহাসিক মূল্য আদৌ আছে কি না সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত ছিলেন না। তিনি আমাদের বলেছিলেন, যদি এর কোনও মূল্য না থাকে, তাহলে আমরা যেন চশমাটিকে ফেলে দিই। কিন্তু ভালভাবে পরীক্ষা করে এর গুরুত্ব যখন ওই ব্যক্তিকে আমরা জানাই, তখন বোধহয় ওঁর চেয়ার থেকে পড়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়েছিল। এ সত্যিই এক অসাধারণ নিলামের গল্প! এমন জিনিসের নিলামের স্বপ্নই তো আমরা দেখে থাকি।’’
জানা গিয়েছে, এই চশমাটি ইংল্যান্ডের এক বয়স্ক ব্যক্তির কাছ থেকে মিলেছে ছিল। তাঁর বাবা জানিয়েছিলেন, এই চশমাটি তাঁর কাকা ১৯১০ থেকে ১৯৩০ সালের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের হয়ে কাজ করার সময় উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে স্টো’র বক্তব্য, ‘এই ব্যক্তি নিশ্চয়ই ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় কাজ করতেন। সেখানেই তিনি এই চশমাটি উপহার পান। তবে আমার মনে এই চশমাটি তাঁর প্রথম জীবনেরই চশমা।’ কিন্তু কীভাবে গান্ধীজির ব্যবহৃত চশমা অন্য একজনের কাছে এল? আসলে গান্ধীজি প্রায়ই তাঁর পুরনো বা অপ্রয়োজনীয় চশমা সেই সব মানুষকে দান করতেন যাঁদের সেটির প্রয়োজন আছে অথবা কোনও না কোনও সময়ে গান্ধীজিকে সাহায্য করেছেন। সেভাবেই হয়তো ওই ব্যক্তিকেও তিনি চশমাটি দান করেছেন। মত স্টো’র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.