সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লন্ডন ব্রিজ হামলায় নিহত জঙ্গি উসমান খানের দেহ পাকিস্তানে পাঠানো হল। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে পৈতৃক ভিটের কাছেই নিহত জঙ্গির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার, পরিবারের হাতে উসমানের দেহ তুলে দেয় লন্ডন পুলিশ। তারপর যাত্রীবাহী বিমানে শুক্রবার তা পৌঁছায় ইসলমাবাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মৃত জেহাদির এক আত্মীয় জানান, সবার নজরের আড়ালেই উসমানের শেষকৃত্য সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন তার বাবা-মা। গোটা ঘটনায় তাঁরা প্রচণ্ড ভয় পেয়েছেন। তাই লন্ডনে ছেলের শেষকৃত্য করতে রাজি হননি। লন্ডনের স্টোক এলাকার বাসিন্দা উসমানের পরিবার। পরিবারের আরও এক সদস্য জানান, ছেলেবেলায় অত্যন্ত নিরীহ এবং ভাল ছেলে ছিল উসমান। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে বিপথগামী হতে শুরু করে সে। ২০১২ সালে জঙ্গিযোগের অভিযোগে তার জেলের সাজা হয়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নজরদারির অধীনে মুক্তি পেলেও স্টোকে কারও সঙ্গেই সে যোগাযোগ করেনি। হামলার পর উসমানের কার্যকলাপের নিন্দাও করেছে তার পরিবার। এই ঘটনার জানার পর হতবাক হয়ে পড়েছিলেন ওই এলাকার সংখ্যালঘু বাসিন্দারা। স্থানীয় কবরখানায় উসমানের শেষকৃত্যে আপত্তি জানান তাঁরা।
উল্লেখ্য, গত মাসে লন্ডন ব্রিজে ছুরি হাতে হামলা চালায় উসমান খান। ওই ঘটনায় নিহত হন দুই সাধারণ মানুষ। রোদন্তে জানা যায়, ২৮ বছরের উসমান কৈশোরের বড় একটা সময় পাকিস্তানে কাটিয়েছে। মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে সেখানে থাকতে হয়েছিল। পরে ব্রিটেনে ফিরে এলেও স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেনি। পায়নি কোনও ডিগ্রিও। ‘দ্য টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিল উসমান। তাকে গ্রেপ্তার করার পর সাজা শোনাতে গিয়ে ২০১২-র ফেব্রুয়ারিতে বিচারক মন্তব্য করেছিলেন, ‘উসমান অত্যন্ত কট্টর জেহাদি। সাধারণ মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক। ওর মুক্তি পাওয়া উচিত নয়।’ আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল উসমানকে। ২০১৩-য় কোর্ট অফ আপিল তাকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়। কিন্তু আট বছর পর প্যারোলে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। যদিও ‘ইলেকট্রনিক ট্যাগ’ লাগিয়ে তার গতিবিধির উপর নজরদারি চালাত পুলিশ।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীরেও জঙ্গি হামলা চালানোর ছক ছিল লন্ডন ব্রিজে হামলাকারী উসমানের]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.