Advertisement
Advertisement

Breaking News

লন্ডন ব্রিজে পাক জেহাদি উসমানের মহড়া নিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত বাঙালি পুলিশ

লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বোমা বিস্ফোরণের ছক কষেছিল উসমান।

London bridge terror attack: Indian origin cop subdues Pak terrorist
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:December 1, 2019 10:24 am
  • Updated:December 1, 2019 4:24 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঘটনাস্থল লন্ডন। যুদ্ধে দুই পক্ষে উপস্থিত ভারত ও পাকিস্তান। এবং শেষ হাসি হাসল ভারতই।

শুক্রবার লন্ডন ব্রিজে জঙ্গি হামলায় এই অদ্ভুত সমাপতন ঘটেছে। জানা গিয়েছে, পুলিশের গুলিতে নিহত আততায়ী উসমান খান সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। এবং জীবনের বেশ কয়েক বছর সে পাকিস্তানে কাটিয়েছে। অন‌্যদিকে, জঙ্গি দমনে ভারপ্রাপ্ত বাহিনী স্কটল‌্যান্ড ইয়ার্ডের কাউন্টার টেররিজম পোলিশিং-এর নেতৃত্বে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট কমিশনার নীল বসু। শুক্রবার তিনিই উসমানের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করেছিলেন।

Advertisement

শনিবার স্কটল‌্যান্ড ইয়ার্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, লন্ডন ব্রিজে ছুরির আঘাতে দুই ব‌্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আততায়ী উসমান খানের সন্ত্রাসবাদী কাজে যুক্ত থাকার অপরাধে জেল হয়েছিল। গত বছর প‌্যারোলে মুক্তি পেয়েছিল। ২৮ বছরের উসমান কৈশোরের বড় একটা সময় পাকিস্তানে কাটিয়েছে। মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে সেখানে থাকতে হয়েছিল। পরে ব্রিটেনে ফিরে এলেও স্কুলের পড়াশোনা শেষ করেনি। পায়নি কোনও ডিগ্রিও। ‘দ‌্য টেলিগ্রাফ’ জানিয়েছে, জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিল উসমান। তাকে গ্রেপ্তার করার পর সাজা শোনাতে গিয়ে ২০১২-র ফেব্রুয়ারিতে বিচারক মন্তব‌্য করেছিলেন, ‘উসমান অত‌্যন্ত কট্টর জেহাদি। সাধারণ মানুষের পক্ষে বিপজ্জনক। ওর মুক্তি পাওয়া উচিত নয়।’ আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল উসমানকে। ২০১৩-য় কোর্ট অফ আপিল তাকে ১৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়। কিন্তু আট বছর পর প‌্যারোলে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। যদিও ‘ইলেকট্রনিক ট‌্যাগ’ লাগিয়ে তার গতিবিধির উপর নজরদারি করা হত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে বোমা বিস্ফোরণের ছক কষেছিল উসমান। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে নিজের পরিবারের জমিতে জঙ্গি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও খুলেছিল। পাশাপাশি, ব্রিটিশ পার্লামেন্টে মুম্বই হামলার ধাঁচে আক্রমণ করার কথাও বলেছিল সে। গোপনে তার কথোপকথন রেকর্ড করেছিল পুলিশ। সেখানে তাকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “আমরা জয়ের জন‌্য আশা করতেই পারি। তাছাড়া ‘শাহাদাত’ (শহিদের মৃত্যু) তো আছেই, নয়তো জেল।” সে সময় উসমান ও তার দুই সঙ্গী মধ‌্য লন্ডনে রেইকিও করে। বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং তৎকালীন লন্ডনের মেয়র বরিস জনসনকে হত‌্যার ছক কষেছিল উসমান।

বিবিসি জানিয়েছে, গত বছরের ডিসেম্বরে জামিন পেয়ে জেল থেকে বেরিয়েছিল উসমান। তারপর থেকে স্ট‌্যাফোর্ডশায়ারে থাকত। আচমকাই শুক্রবারের ওই ঘটনা। নকল বোমার জ‌্যাকেট পরে মানুষের উপর হামলা চালায়। আক্রমণের পর পুলিশের গুলিতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পরে পুলিশ তাকে শনাক্ত করে। নিউ স্কটল‌্যান্ড ইয়ার্ডের সদর দপ্তরের অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট কমিশনার নীল বসু জানিয়েছেন, হামলার আগে লন্ডন ব্রিজের কাছে ঐতিহাসিক ভবন ফিশমঙ্গার’স হলে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল উসমান। উল্লেখ‌্য, লন্ডন ব্রিজ বহুদিন ধরেই জঙ্গিদের নজরে রয়েছে। ২০১৭-র জুনে সেখানে হামলা চালায় ইসলামিক স্টেট জঙ্গিরা। পথচারীদের উপর দিয়ে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে অনেককে পিষে দেয়। তারপর ছুরি হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

চলতি মাসের শুরুতে ব্রিটেন জঙ্গি হামলার আশঙ্কা কমেছে বলে সতর্কতা কিছুটা শিথিল করেছিল। কিন্তু উসমান কাণ্ডের পর নাগরিকদের মধ্যে ফের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, কুখ‌্যাত ও দাগি দুষ্কৃতী, বিশেষত সন্ত্রাসবাদীদের প‌্যারোলে মুক্তি দেওয়ার ‘অভ‌্যাস’ এবার বন্ধ হওয়া দরকার। দুষ্কৃতীদের ক্ষেত্রে আরও কড়া সাজার সুপারিশ করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্বরাষ্ট্রসচিব প্রীতি প‌্যাটেলও।

[আরও পড়ুন: লন্ডন ব্রিজে হামলার ঘটনায় মৃত আরও দুই, প্রকাশিত আততায়ীর পরিচয়ও]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement