সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রকৃতির প্রতিটি সন্তানের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সুন্দর, সুস্থ৷ আদিকালে অন্তত তাই-ই ছিল৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য বন্ধুত্ব কমে প্রতিযোগিতা বেড়েছে৷ যোগ্যতমের উদবর্তন তত্ত্বে দুর্বলকে ধরাশায়ী করেছে সবল৷ আর নগরসভ্যতা বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে চারপেয়েদের বাসভূমি কেড়ে নিয়েছে দু’পেয়ের দল৷ সহাবস্থানের বদলে দ্বন্দ্বে দীর্ণ হয়েছে প্রাণিজগৎ৷ ফলত আরও অনেক বন্যপ্রাণের মতো বিপাকে পড়েছে ইন্দোনেশিয়ার ঐতিহ্যবাহী প্রাণী কমোডো ড্রাগন৷ বিশ্বের সর্ববৃহৎ, বিষাক্ত সরীসৃপ৷
সৈকতঘেরা দেশ ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব উপকূলের কয়েকটি দ্বীপে এই কমোডো ড্রাগনদের৷ বালির উপর দিয়ে বড়সড় জীবটির চলাফেরা একেবারে রাজকীয়৷ আবার এদের বিষধর, লকলকে জিভে ভয়ংকর বিষাক্ত৷ এক লেহনেই জীবনের ইতি৷ এপর্যন্ত শুনে মনে হতে পারে, এমন ঘাতক প্রাণীর বিনাশ দ্রুত হলে তো মঙ্গল৷ কিন্তু না, এখানেই মস্ত বড় ভুল৷
এসব দ্বীপের আদি বাসিন্দারা বলছেন, কমোডো ড্রাগনদের সঙ্গে তাঁদের বেশ সুসম্পর্ক৷ এখানে তাঁরা নিজেদের অধিকারের চেয়ে ড্রাগনদের অধিকারের দিকটাই বেশি দেখেন৷ কারণ, তাঁরা মনে করেন যে দ্বীপগুলি ওই প্রাণীদেরই বাসযোগ্য৷ কিন্তু ইদানিং বাইরে থেকে যারা বিশ্বের এই আশ্চর্য প্রাণীদের দেখতে যান, তাঁরা সমস্ত পরিবেশ নষ্ট করে দিচ্ছেন৷ যাতে এলাকার প্রকৃতিও নষ্ট হচ্ছে৷ তাই স্থানীয় প্রশাসনের দাবি, এবার থেকে পূর্ব ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপগুলিতে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হোক৷ এই মর্মে ইন্দোনেশিয়া প্রশাসনের কাছে আরজি জানানো হয়েছে৷
স্থানীয় গভর্নর ভিক্টর লাইসকোডেট বলছেন, ‘ইউনেস্কোর হেরিটেজ তকমাপ্রাপ্ত এই কমোডো দ্বীপের নাম ড্রাগনদের নামেই৷ তার ঐতিহ্য বজায় রেখে ২০২০ সালে বাইরের পর্যটকদের আসা আমরা বন্ধ করতে চলেছি৷’ এমনকী নতুন করে পর্যটকের আকর্ষণের জন্য তৈরি হওয়া ভবনগুলিও ভেঙে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে৷ যাতে ফের আগের পরিবেশ ফিরিয়ে দেওয়া হয়৷ কমোডো ড্রাগনদের জন্য তৈরি পার্কে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রেও নানা বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছে৷ মোদ্দা কথা, ওদের পরিবেশ ওদের ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে একগুচ্ছ কর্মসূচি নিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন৷ বাকিটা সর্বোচ্চ প্রশাসনের অনুমতির উপর নির্ভরশীল৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.