সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রিটেনের গত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার। দেশের অর্থমন্ত্রী পদে নিযুক্ত হওয়ার মাত্র একমাস পরেই সরিয়ে দেওয়া হল কোয়াসি কোয়ারতেংকে (Kwasi Kwarteng)। শুক্রবার তিনি নিজেই জানিয়েছেন, তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস (Liz Truss)। ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ অর্থমন্ত্রী হিসাবে ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ভুল নীতির কারণেই তাঁকে সরে যেতে হল। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ভুল আর্থিক নীতি গ্রহণ করার ফলে প্রধানমন্ত্রীর উপর বেশ অসন্তুষ্ট তাঁর দলের এমপিরা। ট্রাসকে ১৭ দিন সময় দেওয়া হয়েছে, নিজের আর্থিক নীতি শুধরে নিয়ে দেশের অবস্থার উন্নতি করার জন্য। তা না হলে নিজের পদ খোয়াতে পারেন সদ্য নির্বাচিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার একটি টুইট করে নিজের পদত্যাগপত্রের ছবি প্রকাশ করেন কোয়াসি। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, “সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র স্থিতাবস্থা বজায় রেখে এগিয়ে গেলে কোনও লাভ হবে না। বহুদিন ধরে দেশের অর্থনীতিতে বৃদ্ধি ঘটেনি। সেই সঙ্গে করের বোঝা মধ্যবিত্তের ঘাড়ে চেপে বসেছিল। কিন্তু এইভাবে চলতে থাকলে কোনও ভাবেই দেশের উন্নতি করা সম্ভব নয়।”
— Kwasi Kwarteng (@KwasiKwarteng) October 14, 2022
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচনের সময়ে লিজ ট্রাসের প্রচারের মূল বক্তব্য ছিল, দেশের মানুষের উপর থেকে করের বোঝা কমিয়ে দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেই দেশের সর্বোচ্চ করদাতাদের উপর থেকে করের পরিমাণ ৪৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ভয়াবহ ফল দেখা দেয়। ট্রাসের ঘোষণার পরেই বিশ্ববাজারে ঐতিহাসিক ভাবে কমে যায় ব্রিটিশ পাউন্ডের দাম। বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে মাত্র দশদিনের মধ্যে করছাড়ের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হন লিজ ট্রাস।
সেই সময়েও প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্তকেই সমর্থন করেছিলেন কোয়ারতেং (British Finance Minister)। নতুন করে আর্থিক নীতি তৈরি করে দেশের অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, এমনটাও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শুক্রবারে কোয়ারতেংয়ের পদত্যাগপত্র থেকে পরিষ্কার, করছাড়ের সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তিনি একেবারেই সমর্থন করতে পারছেন না। সেই বিষয়ের উল্লেখও রয়েছে তাঁর পদত্যাগপত্রে। তবে ভবিষ্যতে প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করবেন বলেও জানিয়েছেন ব্রিটেনের বিদায়ী অর্থমন্ত্রী। ব্রিটেনের দুর্বল অর্থনীতির কারণে ইতিমধ্যেই বেশ চাপের মধ্যে রয়েছেন ট্রাস। তারমধ্যে অর্থমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে ফের বিরোধিতার মধ্যে পড়বেন বলেই ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.