সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাস ভেগাস। প্রমোদ নগরী। সমস্ত দুঃখ ভুলে যেখানে জীবনের নেশায় মাতে মানুষ, আমেরিকার সেই শহরেই আজ মৃত্যুমিছিল। মার্কিন মুলুকের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। এখনও পর্যন্ত ৫৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত পঞ্চাশেরও বেশি। নেপথ্যে একটাই নাম, স্টিফেন প্যাডক।
কিন্তু কে এই স্টিফেন প্যাডক? ৬৪ বছরের এক অবসরপ্রাপ্ত অ্যাকাউন্ট্যান্ট। বাড়ি মেসকুইটের নেভাদায়। আইএস-এর অ্যামাক সংবাদসংস্থার দাবি ছিল, প্যাডক তাদেরই জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। সম্প্রতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল সে। কিন্তু লাস ভেগাস পুলিশ আইএস-এর এই দাবি নাকচ করে দেয়। স্টিফেনের ভাই এরিকের দাবি, একেবারে সাধারণ মানুষ ছিল স্টিফেন। টাকা-পয়সার কোনও অভাব ছিল না তাঁর। বরং লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক ছিল সে। এমন মানুষ ছিল যে একটু ভিডিও পোকার খেলতে ভালবাসত আর সমুদ্রে ছুটি কাটাতে যেতে ভালবাসত। তবে এরিকের দাবি, শিকার করার জন্য সাধারণ বন্দুক ছিল তার দাদার কাছে। এর বেশি কিছু ছিল না। স্টিফেনের কাছ থেকে একাধিক স্বয়ংক্রিয় বন্দুক উদ্ধার করেছে পুলিশ। সপ্তাহ দু’য়েক আগে নাকি নিজের মায়ের সঙ্গেও কথা হয়েছিল স্টিফেনের। ৯০ বছরের মায়ের হাঁটার অসুবিধার কথা শুনে একটি ওয়াকার কিনে পাঠিয়ে দিয়েছিল।
[‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসলে জঙ্গি এবং আরএসএস জঙ্গিগোষ্ঠী’]
তবে লাস ভেগাস পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে স্টিফেনের বাবা বেঞ্জামিন বেশ বড় মাপের ব্যাঙ্ক ডাকাত ছিল। এফবিআই-এর মোস্ট ওয়ান্টেড লিস্টে নাম ছিল তার। ধরা পড়ার পর তার মানসিক রোগের চিকিৎসা হয়েছিল। অবশ্য স্টিফেনের তেমন কোনও পুলিশি রেকর্ড নেই বলেই জানা গিয়েছে। কয়েকবার মাত্র ট্রাফিক আইন ভাঙার নালিশ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল হামলার সময় স্টিফেনের সঙ্গেই ছিল তার প্রেমিকা ম্যারিলো ডানলে। কিন্তু পরে জানা যায় ঘটনার সময় দেশের বাইরে ছিলেন তিনি। এদিকে স্টিফেনের প্রতিবেশীর দাবি, কোনও সাতে-পাঁচে থাকত না স্টিফেন ও তার প্রেমিকা। কারও সঙ্গে কথা বলত না। মিশতেও পছন্দ করত না। জানা গিয়েছে, লাস ভেগাসের হত্যাকাণ্ড ঘটানোর আগে বেশ বড় অঙ্কের টাকার লেনদেন করেছিল স্টিফেন। কিন্তু এই টাকা সে পেয়েছিল না কাউকে দিয়েছিল সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি।
আমেরিকার ক্যাসিনো বা নাইটক্লাবগুলিতে বন্দুকবাজের হামলা অবশ্য নতুন নয়। মাস তিনেক আগে আরকানসাসে একটি নাইটক্লাবে কনসার্ট চলাকালীন বন্দুকবাজের হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ১৭ জনের। অরল্যান্ডোর এক নাইটক্লাবে বন্দুকবাজ ঝাঁঝরা করে দিয়েছিল ৪৬ জনকে। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ সোমবারের কনসার্টে হামলা। ঘটনার আকস্মিকতায় শোকস্তব্ধ গোটা বিশ্ব। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের লাস ভেগাসে যাওয়ার কথাও রয়েছে।
[লাস ভেগাসে ক্যাসিনোয় বন্দুকবাজের হামলা, মৃত্যুমিছিল]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.