সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নির্বিচারে গুলি চালিয়ে অন্তত ১০ জন কৃষ্ণাঙ্গকে (Black) হত্যা করেছিল ১৮ বছরের প্যাটন জেন্ড্রন। আমেরিকায় ফের বর্ণবিদ্বেষের বিষ ছড়িয়েছিল প্যাটন। তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর তার এই নিধনযজ্ঞের নেপথ্যের মোটিভ খুঁজতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হাতে এল বলে দাবি মার্কিন পুলিশের। জানা গিয়েছে, কৃষ্ণাঙ্গ হত্যাই ছিল প্যাটনের লক্ষ্য। ১৮০ পাতার ইস্তেহারে তেমনই লিখে রেখেছিল ১৮ বছর বয়সি ছেলেটি। যত পারো, কৃষ্ণাঙ্গ নিধন করো – এই লক্ষ্যেই স্থির ছিল সে। আর তাই গত শনিবার নিউ ইয়র্কের (New York) বাফেলো সুপারমার্কেটে গুলি চালিয়ে পরপর ১০ জনকে নিকেশ করে প্যাটন।
শনিবার সন্ধেয় বাফেলোর এক সুপার মার্কেটে হামলা চালায় বন্দুকবাজ প্যাটন। হেলমেটে মুখ ঢাকা ১৮ বছরের যুবকের পরনে ছিল বিশেষ ধরনের ট্যাকটিক্যাল গিয়ার এবং বর্ম। প্রথমে সুপার মার্কেটের পার্কিং লটে হামলা চালায় ওই যুবক। সেখানে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। তারপর মার্কেটের ভিতরে ঢোকে হামলাকারী। সেই সময় সুপার মার্কেটের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন পুলিশ কর্মী তাকে আটকানোর চেষ্টা করেন। হামলাকারীকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোঁড়েন তিনি। কিন্তু বিশেষ পোশাক থাকায় হামলাকারীর কোনও ক্ষতি হয়নি। বরং তার পালটা গুলিতে লুটিয়ে পড়েন ওই প্রাক্তন পুলিশ কর্মী। মৃত্যু হয় আরও ১০ জনের। এরা সকলেই অ্যাফ্রো-আমেরিকান বলে জানা গিয়েছে।
এত কাণ্ডের পর গ্রেপ্তার হয় ১৮ বছরের প্যাটন জেন্ড্রন। পুলিশ সূত্রে খবর, তার কাছ থেকে মিলেছে ১৮০ পাতার একটি ইস্তেহার। তার প্রায় ছত্রে ছত্রে লেখা – যত পারো, কৃষ্ণাঙ্গ মারো। কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন প্যাটন সেই ইস্তেহারে। নিজে নিউ ইয়র্কের একটি ছোট শহরের বাসিন্দা। এখানে খুব কম সংখ্যক কৃষ্ণাঙ্গের বসবাস। মার্কিন সমাজে সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব মুছে দেওয়াই তার লক্ষ্য ছিল। অর্থাৎ কৃষাঙ্গ, মুসলিম, ইহুদিদের সরিয়ে শ্বেতাঙ্গদের আধিপত্য কায়েম করতে চায় সে। পুলিশ সূত্র আরও জানাচ্ছে, অনলাইনে তার মগজধোলাই করা হচ্ছিল যাতে সে চরমপন্থা নীতি গ্রহণ করে। কৃষ্ণাঙ্গ নিধনের প্রথম অপারেশনের জন্য বাফেলো শহরের এই মার্কেটকে বেছে নেওয়ার কারণ, নিউ ইয়র্কের অন্যতম ব্যস্ত সুপারমার্কেটে অ্যাফ্রো-আমেরিকান বংশোদ্ভুত প্রচুর মানুষ কেনাকাটা করতে আসেন। তাই লক্ষ্যপূরণে সফল হতে প্যাটন এই সুপার মার্কেটে যান।
২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) ক্রাইস্টচার্চে ক্রিস্টানদের উপর নির্বিচারে গুলিচালনায় ৫১ জনের মৃত্য়ুর সঙ্গে জড়িত যে আততায়ী, তার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে প্যাটনের হত্যালীলাকে। সম্ভবত উভয়ের মতাদর্শ এক। বিশ্বজুড়ে শ্বেতাঙ্গের শাসন কায়েম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.