সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১১ নভেম্বর খুলে যাচ্ছে কর্তারপুর করিডর। এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য পাক প্রশাসন সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলেছে। ৩১ আগস্টের মধ্যে করিডর নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। তারপরেই জাঁকজমকের সঙ্গে এর উদ্বোধন হবে। কর্তারপুরের পবিত্র শিখ ধর্মস্থান গুরুদুয়ারের কাছে এই অনুষ্ঠানে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, তাঁর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী আবদুল হাফিজ শেখ এবং উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত থাকার কথা। জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে উত্তেজনার মধ্যে সম্প্রতি পাক সরকার ঘোষণা করে, গুরু নানকের ৫৫০ তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ভারতের শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ যাতে কর্তারপুরে স্বচ্ছন্দে আসতে পারেন, তার জন্য ভিসাহীন করিডর শীঘ্রই খুলে দেওয়া হবে। তারপরেই এই ঘোষণা।
আমেরিকা সফরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে ঘোরতর অস্বস্তিতে পড়তে হয় ইমরানকে। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের করুণ দশা নিয়ে সরাসরি প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। এরপরই মুখরক্ষা করতে উদ্যোগী হন পাক প্রধানমন্ত্রী। গত সপ্তাহেই তিনি সিন্ধু প্রদেশে শিব মন্দিরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠানেও তঁার যোগ দেওয়ার কথা। এরপরেই শিখ সম্প্রদায়কে বার্তা দিতে কর্তারপুর করিডর দ্রুত চালু করে দেওয়ার কথা ঘোষণা পাক সরকারের।
ভারত-পাক আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে পড়ে কর্তারপুর। প্রতি বছর ভারত-পাকিস্তান দু’দেশেরই হাজারো শিখ পুণ্যার্থী দরবার সাহিব কর্তারপুরে প্রার্থনা করতে যান। সেখানে গুরু নানক জীবনের শেষ ১৮ বছর কাটিয়েছিলেন বলে জনশ্রুতি আছে। আর সে কারণেই শিখ সম্প্রদায়ের কাছে জায়গাটি অত্যন্ত পবিত্র। সেই গুরুনানকের ৫৫০তম জন্মবার্ষিকীকে সামনে রেখে শিখদের যাতায়াত সহজ করতে দু’দেশ সীমান্তে করিডর গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ভারতে পাঞ্জাবের গুরদাসপুর জেলার ডেরা বাবা নানক থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করা হবে। আর পাকিস্তানের অংশে করিডর হবে গুরুদুয়ার দরবার সাহিব কর্তারপুর থেকে। ১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতীয়দের ওই উপাসনাস্থলে যাওয়া সীমিত হয়ে যায়। ভিসা পেতেও তাঁদেরকে অনেক কষ্ট করতে হত। এখন নতুন রাস্তা নির্মাণ হয়ে গেলে সারা বছরই পুণ্যার্থীরা খুব সহজে কর্তারপুর যেতে পারবেন। পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য সব ধরনের আধুনিক ব্যবস্থাই করিডরে থাকবে বলে জানিয়েছে ভারত।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ করিডর নির্মাণের সিদ্ধান্তকে দু’দেশের জন্যই শান্তি প্রচেষ্টায় একটি জয় বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ভারত বলেছে, কর্তারপুর যাওয়ার পথে থাকা পুণ্যার্থীদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মতোই সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.