সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন যোগ হয়ে তৈরি হোক একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। কয়েক দশকের ‘দুই দেশ’ নীতি জলাঞ্জলি দিয়ে এমনটাই মন্তব্য করেছেন জর্ডনের প্রধানমন্ত্রী ওমর আল-রাজ্জাজ। তাঁর এই মন্তব্যে রীতিমতো আলোড়ন পড়ে গিয়েছে আরব দুনিয়ায়।
ক্ষমতায় এসে এবার ‘ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক’ দখল করার তোড়জোড় শুরু করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। আর তা নিয়েই প্যালেস্টাইনের বাসিন্দাদের ক্ষোভ চরমে। এমনিতেই ‘ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক’ এলাকায় হাজার হাজার ইহুদিরা কলোনি বানিয়ে রয়েছেন। এর ফলে ওই অঞ্চলের জনবিন্যাসে পরিবর্তনের অভিযোগও উঠছে। এদিকে, ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক দখল হলে কাগজে পত্রেই শুধুমাত্র প্যালেস্টাইনের অস্তিত্বই থাকবে। বাস্তবে আলাদা একটি দেশ গড়ে তোলা আর কখনও সম্ভব হবে না। বিশ্লেষকদের মতে সেই কথা মাথায় রেখেই ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইন দু’টি পৃথক দেশ গড়ে তোলার দাবি থেকে পিছিয়ে এসেছে জর্ডন। বিশ্লেষকদের মতে, একটি যৌথ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হলে ইজরায়েলের ‘ইহুদি’ সর্বস্ব নীতির অস্তিত্ব থাকবে না। গণতন্ত্রের দরবারে ভোটের কারসাজিতে প্যালেস্তিনীয় মুসলিমদের প্রভাব বৃদ্ধি পাবে। তবে সেই সম্ভাবনার কথা মাথায় রয়েছে ইজরায়েলের নীতিনির্ধারকদের। তাই কোনওভাবেই যৌথ গণতান্ত্রিক দেশ গড়ে উঠবে না বলেই মত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের।
মঙ্গলবার, ব্রিটিশ পত্রিকা ‘The Guardian’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জর্ডনের প্রধানমন্ত্রী ওমর আল-রাজ্জাজ বলেন, “যৌথ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ সম্ভব হলে দুই দেশ নীতি বর্জন করা হোক। আজকের পরিস্থিতিতে এই নীতির সপক্ষে কোনও যুক্তি নেই। এবার এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তোলা হোক যেখানে ইহুদি ও আরব, উভয়েরই সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু ইজরায়েলে এই সম্ভাবনার কথা কেউ বলছে না। তারা শুধু বৈষম্যমূলক আচরণেই অভ্যস্ত। “
উল্লেখ্য, ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইনের দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে আরবভূমির বুকে তৈরি ইহুদি দেশটিকে জন্মলগ্ন থেকেই ধ্বংস করার চেষ্টা চালাচ্ছে পড়শি মুসলিম দেশগুলি। এপর্যন্ত একাধিক যুদ্ধও হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে। ১৯৬৭ সালের ‘six day war’ বা ছ’দিনের যুদ্ধে মিশরের উসকানিতে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে জর্ডন। কিন্তু ইহুদি দেশটির দাপটের কাছে মাথা নত করে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক হাতছাড়া হয়ে যায় জর্ডনের। দীর্ঘদিন যে ইজরায়েলের সঙ্গে লড়াই চালানো সম্ভব নয় সে কথা বুঝে ১৯৯৪ সালে পড়শি ইহুদি দেশটির সঙ্গে শান্তিচুক্তি সই করেন সম্রাট হুসেন। তারপর থেকে সেই অর্থে দু’দেশের মধ্যে সংঘাত হয়নি। বলে রাখা ভাল, মিশরের পর আরব দুনিয়ায় একমাত্র জর্ডনই ইজরায়েলের সঙ্গে শান্তচুক্তি সই করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.