সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অবশেষে স্বীকার করল আমেরিকা! গত সপ্তাহেই বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি থেকে শুরু করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এরকম একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কথা হয়। তাঁদের ফোনালাপে উঠে আসে বাংলাদেশে থাকা হিন্দুদের প্রসঙ্গও। তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন নমো নিজে। এনিয়ে নয়াদিল্লির দেওয়া বিবৃতিতে এমনটাই জানানো হয়। কিন্তু মোদি-বাইডেন আলোচনার পর আমেরিকার তরফে বাংলাদেশ নিয়ে কোনও কিছুর উল্লেখই করা হয়নি। বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায় হোয়াট হাউস। যা নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
গত সপ্তাহের সোমবার বাইডেনকে ফোন করেন মোদি। আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে দুজনের মধ্যে কথা হয়। তার পরই হোয়াইট হাউসের দেওয়া বিবৃতি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর বাংলাদেশ ইস্যুতে মোদি-বাইডেন ফোনালাপ নিয়ে মুখ খুলল আমেরিকা। বুধবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা যোগাযোগ উপদেষ্টা জন কিরবি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “আমি একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চাই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন বাংলাদেশের জনগণের নিরাপত্তা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। ভবিষ্যতে সেদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এবং তাঁর এই চিন্তা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে। এই বিষয়টি নিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। দুজনেই এনিয়ে নিজেদের মত বিনিময় করেছেন।”
উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসেই বড় রাজনৈতিক পালাবদল ঘটেছে বাংলাদেশে। ব্যাপক গণ আন্দোলন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ। পদ্মা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। তার পর থেকে সেদেশে হিংসা, অত্যাচারের শিকার হয়েছেন হিন্দুরা। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারত। ফোনে হিন্দুদের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে বাইডেনের সঙ্গে কথা বলার পর মোদি এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। কীভাবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয় সেনিয়ে আলোচনা করেছি। সেখানে থাকা সংখ্য়ালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা নিয়েও কথা হয়েছে।’ এর পরই বিবৃতি দেওয়া হয় বিদেশমন্ত্রকের তরফে। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে বাংলাদেশের প্রসঙ্গের।
কিন্তু বিতর্ক দানা বাঁধে হোয়াট হাউসের দেওয়া বিবৃতি নিয়ে। যেখানে বাংলাদেশের কোনও উল্লেখই করা হয়নি। পুরো বিবৃতিতে জোর দেওয়া হয় শুধুমাত্র ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে। চলমান এই যুদ্ধ নিয়ে মোদি-বাইডেনের মধ্যে কী কথা হয়েছে বিস্তারিত জানানো হয় সেনিয়েই। এর পরই বাংলাদেশের সম্পর্কে আমেরিকার এই অবহেলা বা উদাসীনতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয় আন্তর্জাতিক মহলে। যেখানে প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজে জানিয়েছেন, দিল্লির বিবৃতিতে উল্লেখ রয়েছে সেখানে হোয়াট হাউস কীভাবে বাংলাদেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে গেল? উঠতে শুরু করে এরকম নানা প্রশ্ন। বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিস্থিতিতে মোদি-বাইডেন ফোনালাপে বাংলাদেশের কথা উল্লেখ করে বিতর্ক কমানোর চেষ্টা করেছে হোয়াইট হাউস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.