সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাজার শাক দিয়েও মাছ ঢাকা গেল না শেষ পর্যন্ত। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানের কথা সারাদিন ধরে পাক প্রশাসন অস্বীকার করে গিয়েছে। কিন্তু সন্ধে নামতে ইমরান সরকারের সমস্ত মিথ্যে ফাঁস করে দিল জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ নিজেই। অর্থাৎ, যাদের ঘর পুড়েছে, তারাই কবুল করল – ভারত জইশ ঘাঁটি ভেঙেছে। জইশের বহু সদস্য নিহত। সারাদিন ধরে এই সত্য চেপে রাখতে চেয়েছিলেন ইমরান খান এবং তাঁর মন্ত্রীরা। কিন্তু দিনশেষে তাঁরাই ফের ‘মিথ্যেবাদী’র তকমা পেলেন। জইশ প্রধান মাসুদ আজহার রাওয়ালপিণ্ডি থেকে স্বীকার করেছেন, তার সংগঠনের উপর বড়সড় আঘাত হেনেছে ভারতীয় বায়ুসেনা।
একেই বোধহয় বলে, বিশ্বাসঘাতক। যে দেশের আশ্রয়ে এতদিন নিশ্চিন্তে নিজেদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ চালিয়েছে মাসুদ আজহার, যে দেশের প্রশ্রয়ে ভারতের উপর একের পর এক হামলা করেছে, জিইয়ে রেখেছে ভারত-পাকিস্তানের আদিম বিরোধ, সেই মাসুদ আজহারই এবার পাক প্রশাসনের মিথ্যে ফাঁস করে দিল। পাকিস্তানের কাছে এও এক বড় ধাক্কা। স্বদেশে লালিত সন্ত্রাসের তির এবার তাদের দিকেই ঘুরছে। এবার কি পাকিস্তান বুঝবে, প্রতিবেশীকে শিক্ষা দিতে সন্ত্রাসবাদীকে মদত দিয়ে, ব্যবহার করলে তার ফল ঠিক কী হয়?
তবে মাসুদ আজহারের এই স্বীকারোক্তির আগেও ইমরান সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলেছিলেন তাঁর নিজের মন্ত্রীই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পারভেজ খাট্টকের কথায়, ভারতীয় বায়ুসেনাকে পালটা জবাবের জন্য বাহিনী তৈরিই ছিল। কিন্তু ঘন অন্ধকার থাকায়, তা করতে পারা যায়নি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর এই বিবৃতি সামনে আসতেই ফের মুখ কালো হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের। তাহলে কি পাকিস্তান স্বীকারই করে নিচ্ছে, আকাশপথে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি নিকেশ হয়েছে? প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর বক্তব্যে অন্তত তা আর অস্বীকার করার উপায় রইল না। ফলে পাকিস্তানের দশা এখন পুরোপুরি শাঁখের করাতের মতো। যে পক্ষই নেবে, সেদিক থেকেই ধাক্কা খাওয়া অবধারিত। এনিয়ে রাষ্ট্রসংঘের রক্ষাকবচ চাইছে ইমরান প্রশাসন। বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভারতীয় বায়ুসেনা নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে তাঁদের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে হামলা চালিয়েছে। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে রাষ্ট্রসংঘের দ্বারস্থ হতে চলেছে পাকিস্তান।
[দামি জ্যাকেটেও ঢাকছে না হতাশা, সেনার সঙ্গে বৈঠকে ইমরানের ছবি স্পষ্ট]
চুপ করে বসে নেই পাক সেনাবাহিনীও। ভোরে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে মিরাজ ২০০০-এর অভিযানের পর থেকেই সুযোগ খুঁজছিল। সন্ধের পর থেকে নিয়ন্ত্রণরেখার এপারে জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে গুলিবর্ষণ করে পাক রেঞ্জার্স। সেনাসূত্রে নৌসেরা, আখনুর, পুঞ্চে পাকিস্তানকে জবাবও দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.