সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজার পর এবার ‘নরককুণ্ডে’ পরিণত হচ্ছে লেবানন! হেজবোল্লার ঘাঁটি নিশানা করে সেদেশের অন্তত ৩০০টি জায়গায় ভয়ংকর বোমাবর্ষণ করে ইজরায়েলের সেনা। এই হামলায় লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। অসমর্থিত সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫০০ জন। ইজরায়েলকে পালটা দিয়ে দুশোর উপর রকেট ছুড়েছে ইরানের মদতপুষ্ট শিয়া জঙ্গি সংগঠন হেজবোল্লাও।
গত ১১ মাস ধরে রক্তাক্ত গাজার ছবি দেখছে বিশ্ব। ইজরায়েলের মারে কোণঠাসা হামাস। এখন উদ্বেগ বাড়ছে লেবানন নিয়ে। গাজাযুদ্ধে হামাসের সমর্থনে রয়েছে হেজবোল্লা। বহুবার তারা ইজরায়েলের একাধিক জায়গায় রকেট ছুড়েছে। তাই বহুদিন ধরেই হেজবোল্লাকে কড়া হুঁশিয়ারি দিচ্ছিল তেল আভিভ। এবার এই জঙ্গি সংগঠনকে টার্গেট করে লেবাননে আগুন ঝরাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ। সোমবার ভোরে উত্তর ও দক্ষিণ লেবাননের ৩০০টি জায়াগায় আছড়ে পড়ে একের পর এক ইজরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র। গুঁড়িয়ে যায় হেজবোল্লার ডেরা। কিন্তু এই হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শতাধিক মহিলা ও শিশু। আহতের সংখ্যা দুহাজারের কাছাকাছি। ফলে এই মৃত্যুমিছিল আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা লেবাননের প্রশাসনের।
একদিনের মধ্যে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে লেবানন। চারদিকে রক্তের ছাপ। স্বজনহারা কান্নার আওয়াজে বাতাস ভারী। হাসপাতালগুলো উপচে পড়ছে মৃতদেহে। জখমদের চিকিৎসা করতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। এর আগেও লেবাননে এরকম ভয়ংকর মৃত্যুমিছিল দেখেছে বিশ্ব। ১৯৭৫-১৯৯০ সাল পর্যন্ত চলা গৃহযুদ্ধে লেবাননে প্রাণ গিয়েছিল প্রায় দেড় লক্ষ মানুষের। এর পর ২০০৬ সালেও সংঘাতে জড়িয়েছিল ইজরায়েল ও হেজবোল্লা। সেসময়ও লেবাননে নিহত হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ।
কয়েকদিন আগেই হেজবোল্লাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্ট জানিয়েছিলেন, “যুদ্ধ নয়া মোড় নিয়েছে। হেজবোল্লাকে বড় মূল্য চোকাতে হবে।” এছাড়া সেদেশের সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হালেভির হুঁশিয়ারি, “আমাদের নাগরিকদের বাঁচাতে, যে কাউকে নিশানা করা হবে।” এর পরই পেজার, ওয়াকি-টকি, টেলিফোনের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের বিস্ফোরণে রক্ত ঝড়ে লেবাননে। প্রাণ যায় অন্তত ৫০ জনের। এই হামলার চালানোর পিছনে অভিযোগের আঙুল উঠেছে ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের দিকে। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই ইজরায়েলি সেনার অগ্নিবর্ষণে কাঁপছে লেবানন।
ইতিমধ্যে হেজবোল্লার ডেপুটি চিফ নাইম কাসেম ইজরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, “ইজরায়েলের সঙ্গে লড়াইয়ে নতুন ধাপে পৌঁছেছে আমাদের সংগঠন। ইজরায়েলকে এর দাম চোকাতে হবে।” এই নয়া সংঘাতের জেরে লেবাননের সীমান্ত এলাকা থেকে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্কুল। বিশ্লেষকদের মতে, হেজবোল্লার উপর হামলা চালিয়ে ইরানকে বার্তা দিচ্ছে ইজরায়েল। কারণ এই জঙ্গি সংগঠনকে মদত দিচ্ছে তেহরান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.