সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজায় হামাস জঙ্গিদের ডেরায় এখনও বন্দির সংখ্যা শতাধিক। যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ইজরায়েলের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ দেখাছেন হাজার হাজার মানুষ। প্রশ্ন একটাই, কবে বাড়ি ফিরবেন বন্দিরা? প্রধানমন্ত্রীর বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকারের কাছে এখনও এর উত্তর পাননি তাঁরা। এর মাঝেই ফের গাজা থেকে ৬ পণবন্দির দেহ উদ্ধার করেছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। তাদের অভিযোগ, ওই ৬ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে হামাস জঙ্গিরা। এর পরই নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছেন ইজরায়েলিরা।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বুকে বেনজির হামলা চালায় প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাস। অপহরণ করে নিয়ে যায় প্রায় দুশোর উপর মানুষকে। তার পর থেকে পণবন্দি খুঁজতে ও হামাসকে সমূলে নিধন করতে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে তেল আভিভ। উত্তর থেকে দক্ষিণ তীব্র হামলা চলছে সর্বত্র। মাটির নিচে জঙ্গিদের টানেল বা সুড়ঙ্গগুলোতেও আক্রমণ শানানো হচ্ছে। রবিবার দক্ষিণ গাজার রাফায় অভিযান চালাচ্ছিল আইডিএফ। সেখানকারই একটি টানেল থেকে উদ্ধার করা হয় কারমেল গ্যাট, ইডেন ইরেশালমি, হার্শ গোল্ডবার্গ-পলিন, আলেকজান্ডার লোবানভ ও আলমোগ সারুসি, অরি ড্যানিনো নামে ৬ জনের দেহ। গত ১১ মাস ধরে হামাসের ডেরায় বন্দি ছিলেন তাঁরা। এনিয়ে ইজরায়েলি সেনার মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল ড্যানিয়েল হাগারি জানান “আমাদের পৌঁছনোর আগেই হামাস জঙ্গিরা তাঁদের খুন করে ফেলে। খুব কম সময়ের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে।” প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই রাফার এক টানেল থেকে কায়েদ ফারহান আলকাদি নামে এক ইজরায়েলি পণবন্দিকে উদ্ধার করে আইডিএফ।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, রবিবারই ওই ছয় জনের দেহ ইজরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মধ্য ইজরায়েলের রানানা শহরের বাসিন্দা ছিলেন মৃত আলমোগ সারুসি। এদিন ছেলের দেহের সামনে বসে কান্নায় ভেঙে পড়েন সারুসির মা নিরা। বলেন, “তোমার ফিরে আসার জন্য কত প্রাথর্না করেছি। কিন্তু সব মিথ্যা হয়ে গেল। তোমাকে শেষবারের মতো একবার দেখতে পেলাম না। তোমাকে বুকে জড়িয়ে, তোমার হাসি মুখ দেখার সুযোগ পেলাম না।” তিনি জানান, সারুসিকে ৭ অক্টোবর নোভা মিউজিক ফেস্টিভ্যাল থেকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল জঙ্গিরা।
এদিকে, ইজরায়েলি সেনা ওই পণবন্দিদের মৃত্যুর খবর ঘোষণা করতেই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে জেরুজালেম, তেল আভিভের মতো একাধিক শহর। সকলেই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে দোষারোপ করতে থাকেন। তাঁর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। এক বিক্ষোভকারীকে বলে শোনা যায়, “পণবন্দিদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কোনও মাথাব্যাথাই নেই। এই মৃত্যুগুলোর জন্য শুধুমাত্রই দায়ী তিনিই।” জানা গিয়েছে, মৃত হার্শ গোল্ডবার্গ-পলিন মার্কিন বংশদ্ভূত ছিলেন। পলিন-সহ বাকিদের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হামাসকে এর বড় মূল্য চোকানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, গত জুন মাসে গাজার জাবালিয়া শহর-সহ একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৬ জনের দেহ উদ্ধার করেছিল আইডিএফ। পণবন্দিদের লুকিয়ে রাখা থাকতে পারে এমন জায়গায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.