সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মেয়েটির ছবি দেখা গিয়েছিল ফেসবুকে। জলপাইরঙা গায়ের রং নিয়ে, খয়েরি এক নাকাবে মুখ ঢেকে জড়োসড়ে হয়ে বসে রয়েছে সে।
মেয়েটির ছবি ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলে শেয়ার করেছেন আবু আসাদ আলমানি নামে এক ব্যক্তি। তিনি ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসআইএস-এর সদস্য বলে নিজের পরিচয় দাবি করেছেন। ছবির সঙ্গে লিখেছেন আলমানি, ”সব ভাইয়েরা, যারা যৌনদাসী কেনার কথা ভাবছো, এই পোস্ট তাদের জন্য! মাত্র ৮০০০ ডলার দাম!”
এর কিছুক্ষণের মধ্যেই আরও একটি মেয়ের ছবি পোস্ট করেছেন আলমানি। তারও মুখ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু, ছবিতে দেখা যাচ্ছে, চোখদুটি কেঁদে কেঁদে লাল হয়ে উঠেছে! এরও মূল্য ঘোষণা করা হয়েছে ওই ৮০০০ ডলারই! সঙ্গে লিখেছেন আলমানি, ”এ চলবে?”
পোস্টদুটো মুছে দিতে খুব একটা বেশি সময় নেয়নি ফেসবুক। কিন্তু, তার পর থেকেই প্রকাশ্যে এসেছে এক ভয়ানক সত্য- অনলাইনে এবার যৌনদাসী বিক্রিতে তৎপর হয়েছে আইএসআইএস।
আইএসআইএস অবশ্য অনেক দিন আগেই তাদের ওয়েবসাইটে নানা বয়সের, নানা রঙের মেয়েদের একটা মূল্যতালিকা প্রকাশ করেছিল। তবে, সে সব ছিল নিজেদের মধ্যে ব্যবহারের জন্য! এ ভাবে অন্যদের ব্যবহারের জন্য যৌনদাসী বিক্রির পথে তাদের আগে হাঁটতে দেখা যায়নি।
জানা গিয়েছে, এর মূল কারণ ইরাক এবং সিরিয়ায় সশস্ত্র বাহিনীর হাতে তাদের কোণঠাসা হয়ে পড়া! কিছু দিন আগেই খবর এসেছিল, যুদ্ধে আত্মগোপন করে থাকতে থাকতে এবং পরাজিত হতে হতে মাছ বিক্রি করে দলের খরচ চালাচ্ছে ইসলামি জঙ্গিরা! এবার মাছের বদলে নারী- তফাত বলতে এই!
তা ছাড়া, এ ভাবে যৌনদাসী বিক্রির আরও একটা কারণও রয়েছে। ইসলামি জঙ্গিদল যুদ্ধে হারতে হারতে বুঝতে পারছে, তারা যে নারীদের নিজেদের ব্যবহারের জন্য রেখেছিল, সেটা বেশি দিন চালানো যাবে না। পাশাপাশি, একবার যদি শত্রুরা তাদের যৌনদাসীদের উদ্ধার করে, তবে অনেক তথ্যও ফাঁস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই জন্যই সমমনস্ক ব্যক্তিদের যৌনদাসী বিক্রি করছে তারা।
সমীক্ষা জানাচ্ছে, সব মিলিয়ে সারা বিশ্বেই নানা ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠী হয় তাদের ওয়েবসাইটে, নয় তো সোশ্যাল মিডিয়ায় যৌনদাসী বিক্রির বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। প্রতিবাদে মুখর হচ্ছে বিশ্ব, সরব হয়েছে নানা মানবাধিকার সংস্থা।
কিন্তু, সম্ভাব্য ক্রেতাদের কৌতূহল এবং আগ্রহ দমছে না। আলমানির দ্বিতীয় পোস্টের নিচেই মেয়েটি রোগা বলে মন্তব্য করেছিলেন এক সম্ভাব্য ক্রেতা- ”এর এত দাম কেন? বিশেষ কোনও সুখ দিতে জানে না কি?”
আলমানির উত্তর ছিল- ”বাজারের চাহিদাই ওর এই দাম ধার্য করেছে!”
থমকে যেতেই হচ্ছে এই ‘বাজারের চাহিদা’ শব্দদুটোকে নিয়ে। এত বেশ্যালয় থাকতেও কেন নিজস্ব যৌনদাসী কিনতে চাইছে ইসলামি সমাজ?
কেন না, কিছু মৌলবি ইতিমধ্যেই বিধান দিয়েছেন এই যৌনদাসী বিক্রি নিয়ে। তাঁদের মত, এতে কোনও দোষ নেই! অন্য ধর্মের যে কোনও নারীকে নিগ্রহ করা না কি পুণ্যের কাজ! অতএব, যৌনদাসী কিনে তাদের সঙ্গে শোওয়া বা ইচ্ছেমতো পেটানো- যা খুশি করা যেতে পারে! যত বেশি নির্যাতন করা হবে, ততই না কি বাড়বে পুণ্যের সংখ্যা! প্রশস্ত হবে বেহেশতের দরজাও!
বিশ্ব তার মতো নিন্দা করেই চলেছে ঠিক, কিন্তু ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীও নিজেদের কাজ করেই চলেছে! অনলাইনে এই বিজ্ঞাপন তাদের সেই বেপরোয়া মনোভাবটাকেই ফের প্রমাণিত করল!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.