সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে ইয়েজিদি ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মহিলাদের ওপর আইএস জঙ্গিদের অত্যাচার ও গণধর্ষণ খুবই সাধারণ ব্যাপার। আমি নিজেই ২০০-রও বেশি মহিলাকে ধর্ষণ করেছি। আইএস নেতৃত্বই আমাদের এই কাজের জন্য সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিল।তারা এটাকে উচিত বলেই মনে করত।’ সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনই স্বীকারোক্তি অমর হুসেইন নামে গ্রেপ্তার হওয়া এক আইএস জঙ্গির। গত বছর অক্টোবরে কিরকুক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিরাপত্তা বাহিনী।
২০১৩ সাল থেকে এখনও অবধি ৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে ২১ বছরের হুসেইন। সাক্ষাৎকারে সে আরও জানায়, ‘মা্ত্র ১৪ বছর বয়সেই আইএসে যোগ দিয়েছিলাম। মানুষ মারতে প্রথমে একটু অসুবিধা হলেও ধীরে ধীরে সেটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যায়। সাত, আট, নয়, দশ, ত্রিশ… চল্লিশ এভাবেই সংখ্যা বেড়ে চলছিল। প্রথমে মরুভূমিতে নিয়ে যাওয়া হত, তারপর তাঁদের মেরে ফেলা হত। আমিও এভাবেই মরুভূমিতে অনেককে মেরেছি। যাকে ইচ্ছে তাঁকেই মারতাম।’ হুসেইনের ধর্ষণ এবং খুন করার প্রমাণ পেলেও ঠিক কতজন তার শিকার হয়েছে, সে ব্যাপারে এখনও ধোঁয়াশায় গোয়েন্দারা। তাঁরা জানিয়েছে, প্রথম দিকে হুসেইনকে সামলানো সম্ভব হত না। ওর গায়ের জোর এত বেশি ছিল যে প্লাস্টিকের হাতকড়া ভেঙে ফেলত। তবে এখন জেলের চার দেওয়ালে সারাদিন কোরান পড়েই দিন কাটে তার।
এদিকে হুসেইনের দাবি, সে আসলে পরিস্থিতির শিকার। হুসেইনের কথায়, ‘একটা সময় টাকা ছিল না। কোনটা ভাল, কোনটা খারাপ সেটা বলার মতো কোনও বন্ধু ছিল না। এমনকী, আইএস হঠাতে ইরাকি সেনার আক্রমণে বসবাসের বাড়িটিও ভেঙে যায়।’ এরপরেই স্থানীয় মসজিদের ধর্মযাজকের হাত ধরে আল কায়দায় যোগ দেয় সে। পরে সেখান থেকেই আইএসে যোগদান।
একটা সময় ইরাকি সেনার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে একাধিক শহরে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেছিল আইএস। সেসময় প্রত্যেকটি শহরের বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের ওপর অত্যাচার চালাত জঙ্গিরা। যে বাধা দিতে আসত, তাঁকেই মেরে ফেলা হত। শুধু তাই নয়, ২০১৪ সালে উত্তর ইরাকে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের সময় একাধিক মহিলাদের যৌনদাসীতে পরিণত করে ফেলত আইএস জঙ্গিরা। নির্মমতার এখানেই শেষ নয়, ওই মহিলাদের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের গুলি করে মেরে ফেলা হত। শুধু হুসেইন একা নয়, এরকম আরও অনেক জঙ্গি এখন ইরাকের জেলে বন্দি। ইরাক ও যৌথবাহিনীর আক্রমণে কোণঠাসা আইএসও। আইএস অধ্যুষিত বেশিরভাগ অঞ্চলই পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে তাঁরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.