সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মধ্যপ্রাচ্যে এবার পরমাণু যুদ্ধ? ইরানের হুঁশিয়ারির পর সিঁদুরে মেঘ দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। তেহরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতোল্লা আলি খোমেনেইর উপদেষ্টার সাফ কথা, ইরানের অস্তিত্ব বিপন্ন হলে সামরিক চুক্তিতে বদল আনা ছাড়া উপায় থাকবে না। তারা যে পরোক্ষে ইজরায়েলকেই হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তা বলাইবাহুল্য।
ইরান-ইজরায়েল সংঘাতে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। আপাতত দুজনে ‘বিরতি’ নিলেও সমস্যা মেটেনি। এদিকে বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও গাজার রাফায় সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে তেল আভিভ-ও। হামাসের ‘বন্ধু’ ইরানকেও সতর্ক করেছে তারা। এমন পরিস্থিতি ফের পরমাণু অস্ত্র উৎপাদনের পথে হাঁটার হুমকি দিয়ে রাখল তেহরান। সে দেশের সুপ্রিম লিডার খোমেনেইর উপদেষ্টা কামাল খারাজি বললেন, “এখনই পরমাণু বোমা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত আমরা নিইনি। তবে ইরানের অস্তিত্বকে চ্যালেঞ্জ করা হলে সামরিক চুক্তিতে বদল আনা ছাড়া কোনও পথ থাকবে না।” তাঁর আরও সংযোজন, “ইজরায়েল আমাদের পরমাণু কেন্দ্র বা পরিকাঠামোগুলিতে হামলা করলে নীতি বদল করতে বাধ্য হব।”ইতিমধ্যে ইরানের পরমাণু পরিকাঠামোকে নিশানা করেছিল ইজরায়েল। তবে বিশেষ ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
উল্লেখ্য, বারাক ওবামা মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ইরানের সঙ্গে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল আমেরিকা, ব্রিটেন, চিন, ফ্রান্স ও রাশিয়া। ২০১৫-তে হওয়া এই চুক্তির শর্তানুযায়ী, তাদের যে কোনও রকমের পরমাণু কার্যক্রম বন্ধ রাখবে ইরান। প্রয়োজনে তাদের যে কোনও পারমাণবিক উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে নজরদারি চালাতে পারবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন বা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি। পরিবর্তে ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে মোটা অঙ্কের ত্রাণ পাঠাবে আমেরিকা। যদিও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি কমিশন ইরানের ভূমিকায় সন্তুষ্ট নয়।
ইরানের রক্ষণশীল শাসক খোমেনেই পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার নিয়ে রীতিমতো ফতোয়া দিয়েছিলেন। ২০১৯-এ ইসলামি ধর্মগ্রন্থ উদ্ধৃত করে বলেছিলেন, “পরমাণু বোমা তৈরি এবং মজুত রাখা অন্যায়।” একই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, “আমাদের পরমাণু প্রযুক্তি রয়েছে। তবে ইরান সর্বদা তা এড়িয়ে চলবে।” যদিও ভূরাজনৈতিক কারণে খামেনেইয়ের এই অবস্থান থেকে পরে অনেকটাই সরে আসে ইরান। এবার সেই চুক্তিতে বদল আনার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল তেহরান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.