সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনায় না বসলে ফল ভুগতে হবে। ইরানকে এমনই চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু তাতে কোনও পাত্তা দেয়নি তেহরান। পালটা ইসলামিক দেশটি বার্তা দিয়েছিল, কোনও দরাদরি নয়, যা করার করে নিন। এনিয়ে নতুন করে উত্তেজনার পারদ চড়েছে দু’দেশের মধ্যে। এবার মাটির নিচে ‘মিসাইল সিটি’র ছবি প্রকাশ্যে এনেছে ইরান। যা আসলে তাদের তৃতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডার। সেই ছবি দেখে তাক লেগেছে বিশ্বের। অনেকেই বলছেন, ট্রাম্পের রক্তচক্ষুর তোয়াক্কা না করে এই ছবি দেখিয়ে তেহরান সরাসরি আমেরিকাকেই চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। এনিয়ে এবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট কী বার্তা দেন সেদিকেই নজর সকলের।
বিশ্বশক্তির সমীকরণ দেখলে বোঝা যাবে, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে অহরহ গবেষণা করে চলেছে ইরান। একের পর এক যুদ্ধাস্ত্রের পরীক্ষা চালাচ্ছে তারা। যা চিন্তার কারণা আমেরিক ও পশ্চিমি দুনিয়ার। তাই নানা নিষেধাজ্ঞা চাপানো হচ্ছে তেহরানের উপর। সম্প্রতি সেদেশের উপর ড্রোন উৎপাদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল পশ্চিমা বিশ্ব। কিন্তু তাতে দমে যাওয়ার পাত্র নয় ইরান। পালটা ভয়ংকর হাতিয়ার বানিয়েছে তারা। কামিকাজে ড্রোনটিকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা হয়েছে। যা শত্রুপক্ষের উপর আরও শক্তিশালী আঘাত হানতে সক্ষম। এবার প্রকাশ্যে এল ইরানের ইসলামিক রেভেলিউশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) মিসাইল ভাণ্ডার।
ইরানের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ৮৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, মাটির নিচে একাধিক সুসজ্জিত টানেল। যার মধ্যে সারি দিয়ে সাজানো অত্যাধুনিক মিসাইল। এই অস্ত্রাগারে ইরানের সবচেয়ে শক্তিশালী কিছু ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। যেমন খেইবার শেকান, গদর এইচ, সেজিল এবং পাভেহ ল্যান্ড অ্যাটাক ক্রুজ মিসাইল অন্যতম। জানা গিয়েছে, ইজরায়েলের উপর আক্রমণ শানাতে এই হাতিয়ারের ব্যবহার করেছিল ইরান। এই ‘মিসাইল সিটি’র গোটা ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখেন শীর্ষ সেনা কমান্ডার, মেজর জেনারেল মহম্মদ হোসেন বাঘেরি এবং আইআরজিসি এরোস্পেস ফোর্সের প্রধান আমির আলি হাজিজাদেহ। সমর বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিপুল অস্ত্রভাণ্ডারের ছবি প্রকাশ্যে এনে আমেরিকাকেই বার্তা দিতে চেয়েছে ইরান।
BREAKING
Iran has unveiled perhaps its largest missile city ever that can destroy all US assets in the region
The new underground missile base houses thousands of precision-guided missiles such as Kheibar Shekan, Haj Qasem, Ghadr-H, Sejjil, Emad and others pic.twitter.com/QYR24ZN7TS
— Iran Observer (@IranObserver0) March 25, 2025
কয়েকদিন আগেই তেহরানের প্রতি নরমে-গরমে হুমকির সুর শোনা যায় ট্রাম্পের গলায়। তিনি বলেন, “ইরানের জন্য আমাদের দুটি রাস্তা আছে। হয় সামরিক শক্তি নয়তো পরমাণু চুক্তি। তবে আমি পরমাণু চুক্তিতেই বেশি আগ্রহী। ইরানকে আর সেদেশের মানুষকে এখনই আঘাত করতে চাই না।” এরপরই পালটা বার্তা দিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেস্কিয়ান জানিয়ে দেন, ”আমি দরাদরিতেই যাব না। আপনাদের যা করার করে নিন।”
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে ট্রাম্প জমানাতেই নিহত হন ইরানের ‘কাডস ফোর্স’-এর কমান্ডার জেনারেল কাশেম সোলেমানি। সেবছরের ৩ জানুয়ারি ট্রাম্পের নির্দেশেই বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মার্কিন ড্রোন হামলা হয়। সোলেমানি-সহ প্রাণ যায় ৮ জনের। পালটা মার্কিন সেনাঘাঁটিতে রকেট হামলা চালিয়েছিল ইরানের সেনা। সেই থেকেই দুদেশের মধ্যে সংঘাত আরও তীব্র হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.