সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে ‘নীতি পুলিশ’ তুলে দিল ইরান। দেশজুড়ে চলা হিজাব বিদ্রোহের সামনে নতিস্বীকার করল রক্ষণশীল খামেনেই প্রশাসন। রবিবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে সরকার। অনেকের ধারণা, মাহসা আমিনির মৃত্যুতে দেশে যে আগুন জ্বলে উঠেছে তা প্রশমিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। তবে এর ফলে ‘মোল্লাতন্ত্র’ বিরোধী আন্দোলন থেমে যাবে, এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই।
রবিবার ইরানের অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মোন্তাজেরি ঘোষণা করেন, “বিচারব্যবস্থার সঙ্গে নীতি পুলিশের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই নীতি পুলিশ কোনওদিনই ইরানের কেন্দ্রীয় বিচারব্যবস্থার অন্তর্গত ছিল না। তাই সরকার ওই বাহিনী ‘গস্ত-এ-এরশাদ’কে সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহার করে নিয়েছে।” ইরানের সংসদীয় পরিষদের মুখপাত্র সৈয়দ নেজামোলদিন মউসাভি বলেন, “হিংসা থামানোর সবথেকে সহজ উপায় হচ্ছে মানষের দাবির দিকে নজর দেওয়া।” এই খবর প্রকাশ্যে এসেছে ইরানের সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ মারফত।
উল্লেখ্য, ১৯৭৯ সেলে ইসলামিক বিপ্লবের ফলে ইরানে (Iran) রাজতন্ত্রের পতন হয়। ইউরোপের আদলে আধুনিক দেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন ভেঙে যায় সম্রাট শাহ মহম্মদ রেজা পেহলভির। তারপরই মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাকবিধি চালু হয় ইরানে। আয়াতুল্লা রুহুল্লা খোমেইনির আমলে ওই আইনে বয়স সাত বছরের বেশি হলে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট নিয়মে পরতে হয় হিজাব। ‘নীতি পুলিশের’ দল হিজাব বিধি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কি না, তা তদারকি করে থাকে।
পোশাকবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগে ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল। স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের রাস্তায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আরব দুনিয়ার মেয়েরা। হিজাব বিরোধী (Anti-Hijab) সেই আন্দোলনে শামিল পুরুষদের একাংশও। ফলে প্রবল চাপে পড়েছে দেশটির সরকার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.