সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব বিতর্কে জ্বলছে ইরান। সরকারের দমনপীড়ণেও থামছে না বিক্ষোভ। পথে নেমে নীতি পুলিশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। চুল কেটে, হিজাব পুড়িয়ে ২২ বছরের তরুণী মাহসা আমিনির হত্যার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মহিলারা। এহেন ডামাডোলে মহিলা বিক্ষোভকারীদের বেকায়দায় ফেলতে হিজাব পরিহিত মহিলা কমান্ডো বাহিনী মোতায়েন করেছে প্রশাসন।
সদ্য প্রকাশ্যে আসা ও সোশ্যাল মিডিয়া ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা গিয়েছে ইরানের (Iran) ‘হিজাব রক্ষী’দের। হিজাবে ঢাকা গোটা শরীর। সাদা গ্লাভস পরা হাতে ধরা অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল। ইরানের রাস্তায় নেমেছেন এমনই হাজার হাজার মহিলা কমান্ডো। হিজাব-বিরোধীদের দমন করাই তাঁদের একমাত্র লক্ষ্য। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ঢুকে এই আন্দোলনের প্রধান মুখদের চিহ্নিত করছে এই বাহিনীর সদস্যরা। তারপর তাঁদের জেলে পুরা হচ্ছে। বলে রাখা ভাল, ১৯৭৯ সালের ‘ইসলামিক বিপ্লবে’র পর ২০০৩ সালে প্রথম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে জায়গা পান ইরানি মহিলারা।
এদিকে, প্রশাসনের হাজার চেষ্টা সত্বেও কিছুতেই বিক্ষোভ থামছে না। বরং যত দিন যাচ্ছে, ততই বিদ্রোহের আঁচে আরও উত্তপ্ত হচ্ছে ইরান। পুরুষরাও এগিয়ে এসেছেন হিজাব বিরোধী প্রতিবাদে। হিজাব তো দূর অস্ত, বোরখা খুলে চুল পর্যন্ত কেটে ফেলছেন মহিলারা। সেই চুল দিয়েই বানানো হয়েছে ফ্ল্যাগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ছবি। তবে এসবেরও চেয়েও বেশি যে ভিডিও নজর কেড়েছে নেটিজেনদের, তা হল আরব দুনিয়ার নারী-পুরুষদের মুখে গাওয়া ‘বেলা চাও’য়ের (Bella Ciao) মতো বিদ্রোহের গান।
উল্লেখ্য, মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাক বিধি রয়েছে ইরানে। ওই আইনে বয়স সাত বছরের বেশি হলে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। নির্দিষ্ট নিয়মে পরতে হয় হিজাব। ‘নীতি পুলিশের’ দল হিজাব বিধি সঠিকভাবে কার্যকর হচ্ছে কিনা তা তদারকি করে থাকে। মনে করা হচ্ছে, বছর বাইশের মাহসা আমিনিকে (Mahsa Amini) নীতি পুলিশের অভিযোগেই গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ, মাহসাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয়। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি তরুণীকে মারধর করা হয়নি। তবে গ্রেপ্তারের পরেই অসুস্থ হন তিনি। হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর কোমায় চলে যান। হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.