সংবাদ প্রতিদিন ডিডিটাল ডেস্ক: বিশ্ব মানচিত্রে মহাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে চিন। সমীকরণ পালটে আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে দেশটি। তবে বেজিংয়ের ‘গ্লোবাল ডমিন্যান্স’ বা দুনিয়াজুড়ে দাদাগিরি চালানোর ছকে প্রধান অন্তরায় ভারত। এশিয়া মহাদেশে ভারত আজ বিরাট শক্তিধর এক দেশ। অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও শান্তিপ্রিয় পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসেবে ভারতকে সম্মান করে গোটা বিশ্ব। তাই নয়াদিল্লিকে কোণঠাসা করতে এবার নতুন ছক কষেছে চিন। এবার ব্রিকস (BRICS) গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে সম্প্রসারণের দাবি জানিয়ে চাপ বাড়াচ্ছে কমিউনিস্ট দেশটি।
ভারত, চিন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও রাশিয়াকে নিয়ে তৈরি হয়েছে (BRICS) গোষ্ঠী। আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে জোটের পঞ্চদশ শীর্ষ সম্মেলন। চলবে তিনদিন (২২ থেকে ২৪ আগস্ট)। শুরুতে জল্পনা থাকলেও মঙ্গলবার জোহানেসবার্গের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আসছেন চিনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিংও। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, জিডিপির নিরিখে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন জি-৭ জোটকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে ব্রিকস। ফলে ‘নিউ ওয়ার্লড অর্ডার’ বা বিশ্বে নব্যশক্তির উত্থানে এই জোটকে হাতিয়ার করতে চাইছে বেজিং। আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ায় মোকাবিলার জন্য সেই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আর মিত্র দেশগুলিকে ব্রিকসের সদস্য করে ভারতকে বেকায়দায় ফেলার কাজ শুরু করে দিয়েছে কমিউনিস্ট দেশটি।
জানা গিয়েছে, ব্রিকস-এ যোগ দেওয়ার জন্য ৪০টির মতো দেশ আবেদন করেছে। আর্জেন্টিনা, আলজিরিয়া, ইরান, কিউবা, কঙ্গো, কাজাকস্তান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, পাকিস্তান, বাংলাদেশের মতো দেশ রয়েছে তালিকায়। তাদের মধ্যে কাকে নেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা আসন্ন সম্মেলনে শুরু করবে চিন। জিনপিং সরকার চেষ্টা করবে যে সব দেশে তাদের অর্থনৈতিক প্রভাব এবং আধিপত্য বেশি তাদের ব্রিকস গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত করতে। ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ায় মোকাবিলার জন্য সেই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এদিকে, ভারত এখনই তাড়াহুড়ো করে কোনও দেশের অন্তর্ভুক্তি চাইছে না। তবে গ্লোবাল সাউথের কণ্ঠ হিসেবে ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশকে ব্রিকসে অন্তর্ভুক্ত করার পক্ষেই সায় দিতে পারে দিল্লি। তবে আপত্তি রয়েছে ‘চিনপন্থী’ ইরান ও পাকিস্তানের মতো দেশগুলিকে নিয়ে। ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত পাঁচটি দেশের ঐকমত্য না হলে বিধি অনুযায়ী নতুন কোনও দেশ সদস্য হতে পারবে না। ফলে ভারত না চাইলে একতরফা ভাবে চিন বা রাশিয়ার পক্ষে কোনও দেশকে সদস্য করা সম্ভব নয়। আবার রাশিয়া ও চিনের যুগপৎ চাপ কতদিন প্রতিহত করতে পারবে ভারত তা বলা কঠিন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.