সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শ্রীলঙ্কায় সদ্য সমাপ্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির উদ্বেগ বাড়িয়ে মসনদে বসেছেন ‘চিনপন্থী’ রাজপক্ষ পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্য গোতাবায়া রাজাপক্ষ। ফলে মঙ্গলবারই পরিস্থিতি সামাল দিতে লঙ্কা সফরে রওনা দেন দুঁদে কূটনীতিক তথা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। আলোচনা শেষে বুধবার দেশে ফিতেছেন তিনি।
পসদ্য সমাপ্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর প্রথম বিদেশি প্রতিনিধি হিসেবে লঙ্কায় পা রাখেন জয়শংকর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হয়ে রাজপক্ষকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী। জয়ের পর রাজপক্ষকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।এদিকে, গোতাবায়া জয়শংকরকে স্পষ্ট জানান, প্রতিবেশী ও বন্ধু হিসেবেই ভারতকে তারা সবসময়ের জন্য পাশে চান। চিন ও ভারতের সঙ্গে শ্রীলঙ্কা সম্মানজনক সমদূরত্ব ও সমান ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখবে। উন্নয়ন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারতের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবে শ্রীলঙ্কা সরকার। ভারতের স্বার্থ বিরোধী কোনও কাজে শ্রীলঙ্কার মাটি ব্যবহার হতে দেবে না। গোতাবায়া আরও বলেন, গৃহযুদ্ধের সময় এলটিটিই-কে ধ্বংস করতে ভারত সরকার যেভাবে শ্রীলঙ্কা সরকারকে মদত দিয়েছিল তার জন্য শ্রীলঙ্কাবাসী এখনও ভারতীয়দের কাছে কৃতজ্ঞ।
সোমবার শ্রীলঙ্কার সপ্তম প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নিলেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অনুরাধাপুরা শহরের রুওয়ানওয়েলি স্তুপে দেশের প্রধান বিচারপতি জয়ন্ত জয়সূর্যর উপস্থিতিতে তিনি শপথ গ্রহণ করেন। ছোট্ট বক্তৃতায় তাঁকে সমর্থন করার জন্য বৌদ্ধ ধর্মগুরুদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সিংহলীদেরও। উল্লেখ্য, তামিল জনবহুল এলাকাগুলিতে এগিয়ে ছিলেন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির প্রার্থী সাজিথ প্রেমাদাসা। তবে সিংহলী এলাকায় বিপুল জনমতে মসনদ দখল করতে সফল হন রাজপক্ষে।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মহিন্দা রাজাপাকসের ছোট ভাই গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তিনি শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিবও ছিলেন। দীর্ঘদিন সেনাবাহিনীতে কাজ করেছেন। জাফনায় এলটিটিই-র বিরুদ্ধে অভিযান চলেছিল তাঁর হাত ধরেই। শ্রীলঙ্কায় তামিল ও মুসলিমরা তাঁর উপর অসন্তুষ্ট হলেও সিংহলীদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা প্রবল। তবে রাজপক্ষে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হওয়ায় অস্বস্তিতে ভারত। চিন ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত রাজাপক্ষে পরিবার। প্রেসিডেন্ট থাকার সময় মহিন্দা রাজপক্ষে বরাবরাই বেজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করে গিয়েছেন। ক্ষমতায় থাকাকালীন, ভারতকে কোনও খবর না দিয়েই দুই চিনা সাবমেরিনকে শ্রীলঙ্কায় রাখা হয়েছিল। এমনকী শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরকে কাজে লাগানোর জন্য কলম্বোর ঋণ মেটাতেও সাহায্য করেছিল বেজিং। হাম্বানটোটায় চিনের যুদ্ধজাহাজগুলিতে জ্বালানি ভরার কাজ হয়। সেখান থেকেই ভারত মহাসাগরে চিনের সাবমেরিনগুলি যাতায়াত করে। ফলে ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন থেকেই যায়।
A warm meeting with Sri Lanka President @GotabayaR. Conveyed PM @narendramodi’s message of a partnership for shared peace, progress, prosperity & security. Confident that under his leadership, #IndiaSriLanka relations would reach greater heights. pic.twitter.com/pDxZf0ZM3A
— Dr. S. Jaishankar (@DrSJaishankar) November 19, 2019
[আরও পড়ুন: আওতায় নয়াদিল্লি, যুদ্ধের ডঙ্কা বাজিয়ে আণবিক মিসাইল ছুঁড়ল পাকিস্তান]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.