সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী, সুযোগ পেয়েই তাকে যথাযথ জবাব দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রকের প্রথম সচিব বিদিশা মৈত্র৷ ইমরান খানকে তিনি স্মরণ করিয়ে দিলেন, কূটনৈতিক মঞ্চে এ ধরনের মন্তব্য কখনই প্রত্যাশিত নয়। নিন্দার সুরে জানালেন, একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রসংঘের মতো আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে মধ্যযুগীয় বক্তৃতা দিয়েছেন ইমরান। এ ধরনের মন্তব্য তাঁকে ধ্বংসের মুখে টেনে নিয়ে যেতে পারে।
[ আরও পড়ুন: NRC নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, হাসিনাকে আশ্বাস মোদির ]
ইমরানের বক্তৃতার কড়া সমালোচনা করে বিদিশা মৈত্র বলেন, “এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক যে, পাক প্রধানমন্ত্রী গোটা বিশ্বকে দু’ভাগে ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা-ওরা, ধনী-গরিব, উত্তর-দক্ষিণ, উন্নত-উন্নয়নশীল এবং মুসলিম-অন্যান্য। তাঁর এই ভাষণ প্ররোচনামূলক। ঘৃণায় ভরা। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পরমাণু হুমকি রাষ্ট্রনায়কোচিত নয়, স্বৈরচারীসুলভ।” এছাড়া ওসামা বিন লাদেন থেকে শুরু করে হাফিজ সইদ, সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে পাকিস্তানকে একহাত নেন বিদেশমন্ত্রকের প্রথম সচিব৷ সরাসরি ইসলামাবাদের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, ‘‘পাকিস্তান এ কথা অস্বীকার করতে পারবে যে, তারাই বিশ্বের একমাত্র দেশ যারা রাষ্ট্রসংঘের দ্বারা কালো তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদেরও পেনশন দেয়?’’
[ আরও পড়ুন: পুজোয় চলুন বেদুইনের দেশে, টুরিস্ট ভিসা চালু করছে সৌদি আরব ]
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে ভারতের প্রতি বিদ্বেষ এবং ঘৃণা উগরে দেন ইমরান খান। ব্যক্তিগত স্তরে আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং আরএসএসকে। নির্ধারিত সময় ১৫ মিনিট পেরিয়ে আধ ঘণ্টা ধরে শুধু ভারত বিদ্বেষ ছড়ান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চেও পরোক্ষে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারিও দেন পাক প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘আমি কোনও হুমকি দিচ্ছি না। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলকে ভাবতে হবে তাঁরা ১৩০ কোটির বাজারকে তোষণ করবেন, না নিরীহ নিরপরাধ নাগরিকদের পাশে থাকবেন। দুটি পরমাণু শক্তিধর দেশ যদি যুদ্ধ করে তাঁর প্রভাব কিন্তু গোটা বিশ্বেই পড়বে।” মোদি বিদ্বেষে ভরা বক্তব্যে ইমরান সরাসরি আক্রমণ শানান প্রধানমন্ত্রী এবং সংঘ পরিবারকে। তিনি বলেন, ‘‘মিস্টার মোদি আজীবন আরএসএসের সদস্য। আরএসএস হিটলার-মুসোলিনির আদর্শে অনুপ্রাণিত। সংঘ ভারত থেকে মুসলিমদের মুছে ফেলার ‘জাতি শোধন’ তত্ত্বে বিশ্বাসী। এই ঘৃণার মানসিকতাই গান্ধীকে খুন করেছিল। এই আদর্শেই ২০০২-তে নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন গুজরাটে মুসলিমদের নিয়ে দাঙ্গা বাঁধিয়েছিল। প্রাক্তন কংগ্রেসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিজেই বলেছেন, আরএসএস ক্যাম্পে জঙ্গি তৈরি হয়। এই জঙ্গিরাই ২০০০ মুসলিমকে কেটে ফেলেছিল। ঘরছাড়া হয় দেড় লক্ষ মুসলিম।” কাশ্মীরে কারফিউ নিয়েও এদিন সরব হন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘কারফিউ তুললে কাশ্মীরে রক্তবন্যা বইবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.