সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। শত্রুপক্ষকে কড়া জবাব দিতে প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার পরিকল্পনা চলছে। আর এই সময়েই ভারত মহাসাগরে চলে এসেছে চিনা ‘নজরদারি’ জাহাজ। তাও আবার একটি-দুটি নয় চার-চারটি। যা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে নয়াদিল্লির। আশঙ্কা করা হচ্ছে ‘গুপ্তচরবৃত্তি’র জন্যই সেগুলোকে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে দুটি জাহাজ আবার শ্রীলঙ্কার খুব কাছেই অবস্থান করছে। ফলে ভারতের অনুরোধ উপেক্ষা করে পড়শি দেশ সেগুলোকে নোঙর করার অনুমতি দেয় কিনা সেদিকেও এখন কড়া নজর রাখা হচ্ছে।
‘ওপেন সোর্স’ থেকে পাওয়া তথ্য মোতাবেক ভারত মহাসাগরে চারটি চিনা গবেষণা জাহাজের গতিবিধি নজরে এসেছে। ভারতের আশঙ্কা গবেষণার নামে নজরদারি চালাবে সেগুলো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মুহূর্তে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষানিরিক্ষা শুরু করতে চলছে দিল্লি। আগামী ২৬ থেকে ২৮ মার্চ এবং ৩ থেকে ৪ এপ্রিল বঙ্গোপসাগরে পরীক্ষামূলক মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হবে। সেই প্রস্তুতির উপর নজর রাখতেই কোনও ছক কষেছে বেজিং। তাই ওই জাহাজগুলোকে পাঠানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, যে চারটি চিনা জাহাজ ভারত মহাসাগরে রয়েছে সেগুলো হল- শিয়াং ইয়াং হং ০১, শিয়াং ইয়াং হং ০৩, ইউয়ান ওয়াং ০৩ এবং ডা ইয়াং হাও। যার মধ্যে এদের মধ্যে শিয়াং ইয়াং হং ০১ ও ০৩ শ্রীলঙ্কার খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছে। বাকি দুটি রয়েছে কিছুটা দূরে। ইউয়ান ওয়াং ০৩ রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার উপকূলের কাছে। ডা ইয়াং হাওয়ের অবস্থান ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কার মাঝামাঝি একটি জায়গায়। ফলে শেষমেশ সেগুলো দ্বীপরাষ্ট্রে নোঙর ফেলে কিনা সেদিকেই নজর রেখেছে নয়াদিল্লি।
বলে রাখা ভালো, ২০২৪ সালের শুরুর দিকে শ্রীলঙ্কার বন্দরে সামুদ্রিক গবেষণার জন্য শিয়াং ইয়াং হং ৩ নামের জাহাজ নোঙর করার অনুমতি চেয়েছিল চিন। কিন্তু সেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। বদলে আগামী ১ বছরের জন্য চিনা জাহাজের ঠাঁই নেওয়া স্থগিত করে দিয়েছিল দ্বীপরাষ্ট্রটির প্রশাসন। কিন্তু এবার জানা গিয়েছে, গবেষণার কাজে আসা জাহাজগুলোকে রসদ সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া নিয়ে শ্রীলঙ্কা নিজেদের অবস্থান বদল করেছে। সম্প্রতি একটি জার্মান গবেষণা জাহাজকে কলম্বো বন্দরে রসদ সংগ্রহের অনুমতি দেয় পড়শি দেশটি। যা নিয়ে চিনের সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাদের।
উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কায় সুবিধা করতে না পেরে মালদ্বীপের কাছে ‘শিয়াং ইয়াং হং-৩’ জাহাজটিকে নোঙর অনুমতি চেয়েছিল বেজিং। সেদেশের ‘চিন-পন্থী’ প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু সেই অনুমতি দিয়ে দেন। এর পিছনে যুক্তি ছিল চিনের জাহাজটি গবেষণার জন্য আসছে না। বন্দর থেকে রসদ নিয়ে সেটি ফিরে যাবে। কিন্তু প্রথম থেকেই এই জাহাজটির উপর নজর রেখেছে ভারতীয় নৌসেনা। এর আগে একাধিকবার ভারত মহাসাগরে গবেষণার নামে ‘গুপ্তচর’ মোতায়েন করছে চিন বলে অভিযোগ করেছে ভারত। আশঙ্কা ছিল, শিয়াং ইয়াং হং-৩ শুধুমাত্র মালদ্বীপের জলসীমায় থাকবে না। সেটি শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের মধ্যেও ঘোরাফেরা করবে। ভারত মহাসাগরে লালফৌজ ডুবোাজাহাজগুলোর গতিবিধি আরও বাড়বে। কিন্তু এবার ঘাড়ের উপর নিশ্বাস ফেলছে আরও ৩টি চিনা ‘নজরদারি’ জাহাজ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.