প্রতীকী ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের উত্তপ্ত লোহিত সাগর। ভারতগামী একটি তেলের ট্যাঙ্কারে মিসাইল ছুঁড়ল ইয়েমেনের হাউথিরা। গত কয়েক মাস ধরে লোহিত সাগরে একের পর এক পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালাচ্ছে ইরানের মদতপুষ্ট হাউথিরা। বিভিন্ন দেশের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে সশস্ত্র সংগঠনটি আক্রমণ শানাচ্ছে এডেন উপসাগরেও। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পথে।
বলে রাখা ভালো, গত ডিসেম্বর মাসে ভারতীয় বাণিজ্যতরীতে ড্রোন হামলা চালিয়েছিল হাউথিরা। যার হুঁশিয়ারি দিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, সমুদ্রের গভীর থেকেও হামলাকারীদের খুঁজে বের করবে ভারত। তার পর থেকে ভারতগামী জাহাজে আক্রমণ শানিয়েছে হাউথিরা। ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আমেরিকা ও ব্রিটেনের সঙ্গে মিলে এবার ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠনটির বিরুদ্ধে একজোট হতে পারে নয়াদিল্লি।
ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি ফার্ম অ্যামব্রে সূত্রে খবর, শনিবার ভারতগামী তেলের ট্যাঙ্কারে মিসাইল হামলা চালিয়েছে হাউথিরা। এই আক্রমণে জাহাজটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জানা গিয়েছে, এন্ড্রোমিডা স্টার নামের ক্ষতিগ্রস্ত ট্যাঙ্কারটি সেশেলের মালিকাধীন। এদিন এই হামলার দায় স্বীকার করে হাউথির মুখোপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া দাবি করেছে, পানামার নিশানধারী জাহাজটি ব্রিটেনের মালিকাধীন ছিল। কিন্তু অ্যামব্রের দেওয়া জাহাজটির তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি সেটি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের পর থেকেই লোহিত সাগরে হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন দেশের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে লোহিত সাগরে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইয়েমেনের হাউথিরা। মিসাইল ছুড়ছে পণ্যবাহী জাহাজে। ইরানের মদতপুষ্ট এই জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পালটা আক্রমণ শানাচ্ছে আমেরিকা ও ব্রিটেনও। হামলা করা হচ্ছে জঙ্গি ডেরাতেও।
এই আবহে কয়েকদিন আগেই গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছিলেন, “লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে হামলা চালাচ্ছে হাউথিরা। এর ফলে দুস্থ মানুষদের কাছে খাদ্য ও ওষুধ পৌঁছে দিতে বিঘ্ন ঘটছে। সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাঁদের। আমি জি ৭ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলোকে আহ্বান জানাচ্ছি। এই অঞ্চলের স্বাধীনতা রক্ষায় আমাদের একজোট হতে হবে।” গত বৃহস্পতিবার আমেরিকার এক জাহাজ লক্ষ্য করে ড্রোন ছুড়েছিল হাউথিরা। কিন্তু সেটি আছড়ে পরার আগেই মিত্রবাহিনী তা ধ্বংস করে দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে হামলা তীব্র করেছে হাউথিরা। ইয়েমেনের সশস্ত্র সংগঠনটির তরফে জানানো হয়েছে, গাজায় প্যালেস্তিনীয়দের সমর্থনে এই হামলা চালানো হচ্ছে। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হামাসের পক্ষে রয়েছে তারা। যতদিন না গাজায় ইজরায়েলি ফৌজ হামলা বন্ধ করছে ততদিন এই আক্রমণ চলবে। গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে বেনজির হামলা চালায় প্যালেস্তিনীয় জঙ্গি সংগঠন হামাস। যার বদলা নিতে গত সাত মাস ধরে গোটা গাজা ভূখণ্ড গুঁড়িয়ে দিচ্ছে তেল আভিভ। খুঁজে খুঁজে আক্রমণ করা হচ্ছে জেহাদিদের ডেরায়। ইজরায়েলি বাহিনীর হাতে নিকেশ হয়েছে হামাসের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা। কিন্তু এই যুদ্ধে প্রাণ হারাচ্ছেন গাজার নিরীহ মানুষরাও। ইতিমধ্যেই সেখানে মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.