সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্যত বারুদের স্তূপের উপর রয়েছে পূর্ব ইউরোপ। ইউক্রেনের (Ukraine) রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা দুই প্রদেশকে ইতিমধ্যে স্বাধীন ঘোষণা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এহেন পরিস্থিতিতে উভয়পক্ষকেই শান্তিপূর্ণ ভাবে ও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানাল ভারত।
মঙ্গলবার ইউক্রেন সমস্যা নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সেখানে কিয়েভ ও মস্কো দুই পক্ষকেই সংযত হওয়ার আহ্বান জানায় ভারত। একইসঙ্গে, কূটনীতির মঞ্চে আলোচনার মাধ্যমে সকলের পক্ষে গ্রহণযোগ্য সমাধান সূত্র বের করার বার্তাও দেয় নয়দিল্লি। এদিনের বৈঠকে রাষ্ট্রসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, রাশিয়ান ফেডারেশন ও ইউক্রেনের মধ্যে সংঘাত আঞ্চলিক স্থিতাবস্থা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে। একমাত্র কূটনীতির মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। বলে রাখা ভাল, ইউক্রেনে থাকা প্রায় ২০ হাজার পড়ুয়ার নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে নয়াদিল্লি। এদিন রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তার পরিষদে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি টি এস তিরুমূর্তি বলেন, “ইউক্রেনে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন ভারতের কাছে সবচেয়ে জরুরি কাজ।” শুধু তাই নয়, বৈঠকে রাশিয়া ও ইউক্রেন সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পক্ষে মত দিয়েছে নয়াদিল্লি। এদিকে ইউক্রেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের ফেরাতে আজ কিয়েভের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়ার বি-৭৮৭ বিমান। যাত্রীদের নিয়ে আজ রাতেই দিল্লি ফিরবে বিমানটি, বলে খবর এএনআই সূত্রে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছে নয়াদিল্লি বলেই মত বিশ্লেষকদের। কারণ, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক ও অত্যন্ত মজবুত। সোভিয়েত জমানা থেকেই প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে রুশ অস্ত্রের বড় খদ্দের ভারত। দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্কও অত্যন্ত শক্তিশালী। সেই সম্পর্ক কিছুতেই নষ্ট করতে চায় না মোদি সরকার। তাই আমেরিকা সুর চড়ালেও এখনও ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত। অন্যদিকে, অস্ত্র আমদানি ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভাল।
উল্লেখ্য, সোমবার রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের মর্যাদা দিল রাশিয়া। ফলে ক্রিমিয়ার পর আবারও বিভক্ত হয় ইউক্রেন। এহেন চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে জরুরি বৈঠকে বসেছে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা বৈঠক। পরিস্থিতির মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ফোনে আলোচনা করেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.