সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমকামিতা তাদের কাছে গুরুতর অপরাধ। শুধু অপরাধই নয়, ডাইনি অপবাদ দিয়ে সমকামীদের সংশোধন করার নামে চলে অকথ্য অত্যাচার। অত্যাচার করা হয় গির্জার অনুমতি নিয়েই। অত্যাচার থেকে বেঁচে উঠলেও স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন সমকামী মহিলা ও পুরুষরা। দেশটি হল মধ্য আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুন। কিংবদন্তি ফুটবলার রজার মিল্লার দেশ হিসাবেই দুনিয়ায় বেশি খ্যাতি ক্যামেরুনের। কেউ বলেন সিংহের দেশ।
[চোখের চিকিৎসায় বিপ্লব এনে পদার্থে নোবেল তিন বিজ্ঞানীর]
ক্যামেরুনে সমকামীদের গুরুতর ছবিটা নিজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে তুলে ধরেছে চতুর্দশী ভিভিয়ানে। সমকামী ভিভিয়ানে এখন পালিয়ে গিয়ে ফ্রান্সে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখান থেকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলিকে ফোনে এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, রাজধানী ইয়াউন্দেতেই হয় এই সামাজিক অত্যাচার। সেখানে গির্জার হস্তক্ষেপে স্থানীয় প্রশাসনের মদতে ভূত ছাড়ানোর অনুষ্ঠান করা হয়। কারণ সমকামী পুরুষ বা মহিলাকে রোগী চিহ্নিত করে ঘোষণা করা হয়, তাকে ভূতে পেয়েছে। তারপর প্রকাশ্যে চলে গণধর্ষণ। অসুস্থ মহিলাকে কয়েক দিন ধরে নির্দিষ্ট সময়ে গণধর্ষণ করা হয়। ছাড় পায় না সমকামী পুরুষরাও। তাদেরও শারীরিক অত্যাচার করা হয়। আগুন বা কাঁটার মধ্যে দিয়ে হাঁটানো হয়। পশুর সঙ্গে যৌন সঙ্গমে বাধ্য করা হয় পুরুষদের। হাত-পা, গলায় চেন বেঁধে ধর্ষণ করা হয় মহিলাদের। রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে বিভিন্ন গির্জার মাঠে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই সব নারকীয় অত্যাচার চলে। গণধর্ষণে অংশ নেয় সমকামী মহিলার নিজের পরিবারের লোকেরাই। শিউরে ওঠার মতো এই ঘটনা কাঁদতে কাঁদতে বলে গিয়েছেন ভিভিয়েনা।
[সম্মুখসমরে বেজিং-ওয়াশিংটন! দক্ষিণ চিন সাগরে মুখোমুখি দু’দেশের রণতরী]
পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমগুলির মতে, গোটা আফ্রিকাতেই সমকামী ও এলজিবিটিদের নরকের কীট বা পাপী হিসাবে দেখা হয়। তাঁদের জীবন দুর্বিষহ। ৩৩ টি আফ্রিকার দেশে সমকামিতাকে অপরাধ হিসাবে ঘোষণাকরা হয়েছে। সমকামিতার বিরুদ্ধে আফ্রিকার গির্জা ও মসজিদগুলির দাবিকে সমর্থন করেছে সব সরকারই। নাইরোবি, উইনধোক, খার্তুমের মতো শহরগুলিতে যে সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সমকামীদের মানবাধিকার নিয়ে প্রতিবাদে সরব হয়েছে তাদের উপর নৃশংস হামলা চালিয়ে তাদের চুপ করিয়ে দিয়েছে রক্ষণশীলরা। এই সব ঘটনায় পুরো মদত রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনের। ফলে আর্থিকভাবে সচ্ছল সমকামীরা আফ্রিকা ছেড়ে ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয় নিচ্ছেন। যাঁরা পারছেন না তাঁরা পঁচছেন অন্ধকারাচ্ছন্ন মহাদেশে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.