Advertisement
Advertisement
ভুটান

পাঁচদিন রাষ্ট্রনেতার কুরসিতে,শনিবার জনগণের স্বাস্থ্যসেবা ভুটানি প্রধানমন্ত্রীর

১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ডাক্তারি পড়েছেন লোটে শেরিং৷

In Bhutan, The Prime Minister Is A Doctor Every Saturday
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:May 10, 2019 7:57 pm
  • Updated:May 10, 2019 7:57 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘জীবে প্রেম করে যেইজন, সেইজন সেবিছে ঈশ্বর’৷ এই আপ্তবাক্যটিকে অক্ষরে অক্ষরে সত্যিই করে তুলছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী৷ সপ্তাহে পাঁচদিন অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানের মতোই তাঁর সময় কাটে দেশ পরিচালনার কাজে। কিন্তু, প্রত্যেক শনিবার নিয়ম করে হাসপাতালে গিয়ে রোগীদের চিকিৎসা করেন লোটে শেরিং।

গত শনিবারই যেমন জিগমে দোর্জি ওয়াংচুক ন্যাশনাল রেফারাল হাসপাতালে একজন রোগীর মূত্রাশয়ে অপারেশন করলেন তিনি। তাঁর কথায়, “চিকিৎসার কাজে রোগীদের মাঝে থাকলে চাপ কমে। অনেকেই আছেন যারা ছুটির দিনে ফুটবল খেলে কাটান। কেউ বা খেলেন গল্ফ৷ পুরো সপ্তাহ কাজ করার পর আমিও ক্লান্ত হয়ে পড়ি৷ কিন্তু, প্রতি শনিবার রোগীদের চিকিৎসা করে প্রচুর আনন্দ পাই। যা আমার শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে অনেকটা সাহায্য করে।”

Advertisement

দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চিকিৎসা পরিষেবা পাওয়ার পর খুশি হন রোগীরাও৷ মূত্রাশয়ের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন থিম্পুর বাসিন্দা বুমথাপ৷ শনিবার প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে তাঁর অস্ত্রোপচার করেন শেরিং৷ দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পরিষেবা পেয়ে ভীষণ আনন্দিত বুমথাপ৷ আসলে রোগীদের অপারেশন করা এবং প্রধানমন্ত্রীর কাজ – দুটোকেই এক চোখে দেখেন লোটে শেরিং৷ তাঁর মতে, হাসপাতালে একজন ডাক্তার রোগীকে সারাতে ওষুধ দেন কিংবা শরীরের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করেন৷ প্রধানমন্ত্রীর কাজও প্রায় একই ধরনের, তাঁকেও সরকারের বিভিন্ন নীতি ও প্রকল্পের প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে হয়। দেশের নাগরিকদের জীবনযাপনের মানের সার্বিক উন্নতির চেষ্টা করতে হয়৷

[আরও পড়ুন- লন্ডনে নৃশংসভাবে খুন ভারতীয় যুবক, কারণ নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ]

এমনিতে প্রতিদিন নিজেই গাড়ি চালিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে যান লোটে শেরিং৷ তাঁর এই যাত্রাপথের মধ্যে হাসপাতাল পড়লেও নিজের আবেগকে সামলে নেন৷ এপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, “হাসপাতাল দেখে আমার মনে হয়, গাড়িটি ঘুরিয়ে যদি হাসপাতালে চলে যেতে পারতাম!”

[আরও পড়ুন- হ্যারি-মেগানের সন্তান নিয়ে কুরুচিকর টুইট, চাকরি গেল বিবিসি প্রতিনিধির]

১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে পড়েছেন লোটে শেরিং৷ এমবিবিএস কোর্স শেষ করার পর একটি প্রশিক্ষণও নেন ময়মনসিংহে৷ তারপর জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড গিয়ে এই বিষয়ে আরও পড়াশোনা করেন। আর তা শেষ হতে শুরু হয় পেশাদার ডাক্তার হিসেবে পথচলা৷ প্রায় এক দশক এই পেশায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি৷

২০১৩ সালে আচমকা ভুটানের জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেন তিনি৷ কিন্তু, সেবার ভাগ্য সহায় হয়নি৷ তাই ফের ফিরে যেন পুরনো পেশায়৷ এসময় দেশের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে চিকিৎসা করেছেন তিনি। ২০১৮ নির্বাচনে যেন তারই সুফল মেলে। ভুটানের তৃতীয় জাতীয় নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রী পদে বসেন লোটে শেরিং৷ আর তারপরই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে নেন বিভিন্ন উদ্যোগ। যার ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় ভুটানের নাগরিকরা অনেক বেশি সুখী বলে প্রকাশিত আর্ন্তজাতিক সমীক্ষায়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement