সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্যালেন্ডারের পাতায় যাকে বলে ‘রেড লেটার ডে’৷ ১৭ মে দিনটি শুধু তাইওয়ানের ইতিহাসেই নয়, গোটা এশিয়া মহাদেশের এক বিশেষ দিন৷ আজ থেকে তাইওয়ান প্রেসিডেন্ট সমকাম বিবাহ আইনসম্মত ঘোষণা করায় এশিয়ার মধ্যে তাইওয়ানই প্রথম দেশ হিসেবে এই পদক্ষেপকে আইনি স্বীকৃতি দিল৷ ২ বছর আগেই সেখানকার সর্বোচ্চ আদালত সমকাম বিবাহের পক্ষে মতদান করেছিল৷ পার্লামেন্টে বিল এনে বিষয়টি আইনসম্মত করার প্রক্রিয়ার সময়সীমা ছিল ২৪ মে, ২০১৯৷ কিন্তু তার আগেই শুক্রবার পার্লামেন্ট সমকাম বিবাহকে আইনি ঘোষণা করা হয়৷ এরপরই বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন রাজধানী তাইপেইর সমকামী যুগলরা৷ উৎসব শুরু হয়ে যায় দেশের অন্যান্য প্রান্তেও৷
২০১৭ সালের সেই দিনটা ছিল ঐতিহাসিক৷ তাইওয়ানের সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়েছিল, দেশের আইন যে শুধু নারী-পুরুষের বিয়েকেই আইনি বৈধতা দেয়, তা অসাংবিধানিক। কোর্টের নির্দেশ ছিল, দু’সপ্তাহের মধ্যে দেশের আইনবিভাগকে বিশেষ আইন পাশ করে সমকামী বিয়েকে বৈধ বলে ঘোষণা করতে হবে৷ নয়তো আইন ব্যতিরেকেই তাকে আইনসিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। পরে সেই সময়সীমা বাড়ানো হয়৷ শুক্রবার নির্দিষ্ট সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে দেশের আইনসভার সদস্যরা সমকামী বিবাহ সংক্রান্ত তিনটি বিলে ভোটের আয়োজন করে। কিন্তু সেই ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে তৈরি হয় উত্তেজনা৷
সমকাম বিয়ে নিয়ে এদিন যে তিনটি বিল নিয়ে ভোটাভুটি হয়, তার মধ্যে একটি প্রেসিডেন্ট ইং ওয়েন ক্যাবিনেটের পেশ করা। একমাত্র সেটিতেই ‘বিবাহ’ শব্দটির ব্যবহার রয়েছে এবং আলাদাভাবে সমকাম পরিণয়কে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। বাকি দু’টি বিল বিরোধী গোষ্ঠীর পেশ করা। সেখানে স্বাভাবিক ভাবেই ‘বিবাহ’ কথাটিরই ব্যবহার নেই৷ রয়েছে ‘সমকাম মিলন’–এর মতো আপত্তিজনক শব্দবন্ধ। আইনজীবী ভিক্টোরিয়া সু-এর মত, ‘আশা করি, আইনসভা ক্যাবিনেটের বিলটিই পাশ করবে। সেটি ত্রুটিহীন না হলেও অন্তত বিয়ের মতো সামাজিক সম্পর্ককে মান্যতা দেয়, সম্মান জানায়৷’
কিন্তু এনিয়ে গত নভেম্বরে গণভোটের পর থেকে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল এশিয়ার অন্যতম এগিয়ে থাকা দ্বীপদেশ তাইওয়ানে। গণভোটের রায়ে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, সমকাম বিয়ে নিয়ে আপত্তি রয়েছে অধিকাংশ বাসিন্দাদের। কিন্তু আইনসভার সদস্যরা তাকে আইনি স্বীকৃতি দিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন৷ শাসকদল ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি যেহেতু পার্লামেন্টে শক্তিশালী, তাঁদের ভোটাভুটিতেই জয়ের মুখ দেখে সমকাম বিয়ে সংক্রান্ত বিল৷ এবং আইনি স্বীকৃতি পায়৷ ম্যারেজ ইকুয়ালিটি কোয়ালিশনের মুখপাত্র জেনিফার লু-র কথায়, ‘আজকের রায়ে আমরা স্পষ্ট বুঝে নিলাম, ভবিষ্যতে সমকামী দম্পতিকে দেশ কোন চোখে দেখবে৷’ ভোটে জয়লাভ প্রেসিডেন্ট নিজে টুইট করে লিখেছেন, ‘তাইওয়ানকে আরও উন্নত করতে এবং প্রকৃত অর্থে সমানাধিকারের ক্ষেত্রে আমরা একধাপ এগিয়ে গেলাম৷’ তিনি আশাপ্রকাশ করেছেন, তাইওয়ানের পথ ধরে এশিয়ার আরও অনেক দেশ এগিয়ে আসবে৷
Good morning #Taiwan. Today, we have a chance to make history & show the world that progressive values can take root in an East Asian society.
Today, we can show the world that #LoveWins. pic.twitter.com/PCPZCTi87M
— 蔡英文 Tsai Ing-wen (@iingwen) May 17, 2019
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.